জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কানাইপুকুর গ্রামে প্রতিদিন সকালে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে এলাকার মানুষের। পুরো গ্রাম এখন যেন এক জীবন্ত পাখির অভয়ারণ্য। বিশেষ করে বিরল প্রজাতির শামুকখোল পাখির উপস্থিতিতে গ্রামটি পেয়েছে নতুন পরিচিতি—‘পাখির গ্রাম’।
প্রায় দশ হাজারেরও বেশি পাখি আশ্রয় নিয়েছে এ গ্রামে, যার মধ্যে শামুকখোল ছাড়াও রয়েছে কানা বক, পানকৌড়ি, শঙ্খচোরা, হরিয়ালসহ নানা প্রজাতির পাখি। স্থানীয়রা জানান, তাঁরা পাখিগুলোকে পরিবারের সদস্যের মতো যত্নে লালন করছেন।
গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশের পুকুরকে কেন্দ্র করে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে রয়েছে বট, নিম, তেঁতুল, আম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ। একসময় এসব গাছে রাতচোরা পাখি বাসা বাঁধলেও এখন সেখানে রাজত্ব করছে শামুকখোলদের। তিনি জানান, “প্রায় ২০ বছর ধরে এপ্রিল মাসে পাখিগুলো আসে, বাসা বাঁধে, ডিম দেয়। জুন মাসে বাচ্চা ফোটে, আর শীতের শুরুতে তারা অন্যত্র চলে যায়।”
স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল আহম্মেদ বলেন, “পাখিগুলো আমাদের গ্রামের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। কেউ যেন ওদের বিরক্ত না করে, সে বিষয়ে সবাই সতর্ক।”
জয়পুরহাট সদর থেকে আসা দর্শনার্থী অনুজ ও আসফী বলেন, “এত পাখি একসঙ্গে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পরিবেশটা যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি দেয়।”
কালাই উপজেলা থেকে আসা লুবনা জয়া বলেন, “শামুকখোল এখন সচরাচর দেখা যায় না। এখানে এদের দেখা পাওয়া সত্যিই আনন্দের। সরকারের উচিত এদের সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া।”
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা এ কলোনি পরিদর্শন করেছি। অসুস্থ বা আহত পাখির চিকিৎসা ও পরামর্শের জন্য আমাদের টিম প্রস্তুত থাকে। শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে মূলত প্রজননের জন্য। নিরাপদ পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাবার পেলে তারা দীর্ঘ সময় অবস্থান করে।” তিনি আরও বলেন, “সরকারের সহযোগিতায় এ স্থানটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.