রাজবাড়ী প্রতিনিধি
অবশেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষণা করেছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা। ৩০০ আসনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও এখনো অনিশ্চয়তায় রয়ে গেছে রাজবাড়ী-২ আসনের প্রার্থী ঘোষণা।
ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটি ঘিরে চলছে তীব্র আলোচনা, বিশ্লেষণ ও মতবিরোধ।
রাজবাড়ী-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম মনোনয়ন পেলেও রাজবাড়ী-২ (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) আসনে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি দল।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে—“সঠিক প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল হলে রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে।”
অতীতে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফলে বিএনপির সামনে চ্যালেঞ্জ এখন মাঠ পুনর্দখল করে শক্ত অবস্থান তৈরি করা।
বর্তমানে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন দুই সিনিয়র নেতা—সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরুল হক সাবু,সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নেতাকর্মীদের মতে, “সাবু বা হারুন—এই দুজনের মধ্যে যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দিলে মাঠে বিএনপির উপস্থিতি যেমন দৃঢ় হবে, তেমনি স্থানীয়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাসও ফিরবে।”
তবে এর মধ্যেই নতুন গুঞ্জন উঠেছে—রাজবাড়ী-২ আসনটি শরিক দল এনডিএমের মহাসচিব মোমিনুল আমিনের কাছে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি মোমিনুল আমিন নিজেকে রাজবাড়ী-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দোয়া কামনা করেছেন। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তাদের দাবি, “বহিরাগত কাউকে প্রার্থী করা হলে স্থানীয় সংগঠনের ভিত্তি ভেঙে পড়বে, নেতাকর্মীরা নিরুৎসাহিত হবে।”
স্থানীয়রা আরও আশঙ্কা করছেন—সাবেক মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ও তার পুত্রের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক এখনো সক্রিয়। তাই যোগ্য, জনপ্রিয় ও সাংগঠনিকভাবে দৃঢ় প্রার্থী ছাড়া বিএনপির জন্য এই আসনে টিকে থাকা কঠিন হবে।
সবশেষে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটাই প্রত্যাশা—“রাজবাড়ী-২ আসনে নাসিরুল হক সাবু বা হারুন অর রশিদ হারুনের মধ্যে কাউকে প্রার্থী করা হলে বিএনপির অবস্থান শক্ত হবে এবং জনগণও আস্থায় ফিরে আসবে।”
রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির ভবিষ্যৎ তাই এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে সঠিক প্রার্থী বাছাইয়ের ওপর।
একটি ভুল সিদ্ধান্ত দলকে শুধু নির্বাচনী পরাজয়ের দিকেই নয়, দীর্ঘমেয়াদী সাংগঠনিক সংকটের মুখেও ঠেলে দিতে পারে।

