নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন মারুফ (২২) নামের এক যুবক। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার বন্ধু জামিল (২৪)। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল হোতা রবি ও তার সহযোগী সাব্বিরকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে গাছা থানাধীন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মারুফ কুনিয়া তারগাছ এলাকার মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে, আর আহত জামিল একই এলাকার আতাউল্লাহর ছেলে ও স্থানীয় একটি সিগারেট কোম্পানির কর্মী।
জামিল দোকানে গেলে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও কয়েকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। তাদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে রবির সঙ্গে জামিলের বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি শান্ত করতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে গেলে রবি ও তার সহযোগীরা দুজনের ওপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে তাহেরুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মারুফকে মৃত ঘোষণা করেন, আহত জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে একাধিক টিম কাজ করছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোঃ জাহিদুল হাসান বলেন, মারুফ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪)-কে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া এলাকা থেকে এবং এজাহারনামীয় দ্বিতীয় আসামি সাব্বির হোসেন (১৮)-কে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রবি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধে সক্রিয় ছিল। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ না থাকায় তাদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও কিশোর গ্যাং দমনে কার্যকর অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন।

