খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার রূপসাঘাটে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী তৎপরতা ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এ পরিস্থিতি বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন সাংবাদিক নেতা ও রূপসা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম তোতা।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষের যাতায়াতের অন্যতম কেন্দ্র রূপসাঘাট বর্তমানে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির কবলে পড়েছে। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীকে ঘাটের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী দৌরাত্ম্য এবং প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে নানাভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘাটে পারাপারের জন্য নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। আগে যেখানে পারাপারের ভাড়া ছিল ১ টাকা, এখন তা বেআইনিভাবে দ্বিগুণ আদায় করা হচ্ছে। ট্রলার পারাপারে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি অর্থ নেওয়ার পাশাপাশি নারী যাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের ঘটনাও নিয়মিত ঘটছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘাটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন ব্যক্তি প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন, যার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঘাটের বর্তমান ইজারাদার আলী আকবর নিজেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয়ে ঘাটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। তার নিয়োগপ্রাপ্ত একদল চরমপন্থী ব্যক্তি, জাহিদ নামের এক সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে, প্রতিদিন যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করছে। অভিযোগে বলা হয়, সন্ধ্যার পর মাদকাসক্ত ট্রলারচালকরা পারাপারে নিয়োজিত থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
রবিউল ইসলাম তোতার দাবি, খুলনা অঞ্চলের বিআইডব্লিউটিএর কিছু কর্মকর্তা ইজারাদার চক্রের সঙ্গে গোপন যোগসাজশে লিপ্ত। বিশেষ করে উপপরিচালক মো. মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার ভাষায়, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানলেও রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, নারী যাত্রীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত অপমানজনক আচরণ করা হচ্ছে। সশস্ত্র ক্যাডারদের উপস্থিতিতে নারীরা আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করছেন। সন্ধ্যার পর ঘাট এলাকা নারীদের জন্য একেবারেই অনিরাপদ হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি অপসারিত এক সন্ত্রাসীর স্থলে নতুন এক ধর্মীয় লেবাসধারী চাঁদাবাজ চক্রের উত্থান ঘটেছে বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়েছে। এই চক্র ধর্মীয় বয়ানের আড়ালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে চাঁদা তুলছে এবং সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে উল্লেখ করা হয়।
রবিউল ইসলাম তোতা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে রূপসাঘাটে অনিয়ম, চাঁদাবাজি ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। মানববন্ধন ও সংবাদ প্রচারের পরও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছি।”
তিনি রূপসাঘাটে নিরাপদ পারাপার নিশ্চিত, চাঁদাবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ ও নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
অভিযোগপত্রের অনুলিপি নৌপরিবহন, স্বরাষ্ট্র, এলজিআরডি উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ একাধিক দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.