ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মৃত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সুপারের সাক্ষর জাল করে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এক অদ্ভত ঘটনার সাক্ষি হলেন ঝিনাইদহ সিআইডির পরিদর্শক আব্দুর রহিম। সিআইডি কর্মকর্তার মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে পৌছানোর খবর পেয়ে সুপার ইয়ারুল হকসহ একে একে পালিয়ে গেলেন ৬ জন শিক্ষক।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার দুপুরে (৯ নভেম্বর) ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারফলসি মাদ্রাসায়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসি বলছেন, পার ফলসি মাদ্রাসার শিক্ষকদের মাঝে মধ্যে কি যেন হয়। প্রায়ই দেখা যায় তারা দল বেঁধে পালাচ্ছেন।
ঝিনাইদহ সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আব্দুর রহিম খবর নিশ্চিত করে জানান, মাদ্রাসার মৃত সভাপতির সাক্ষর জাল করে ওই মাদ্রাসায় ১২জন শিক্ষক নিয়োগ করা হলে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নামে সিআইডি। একাধিকবার ওই মাদ্রাসায় সরজমিন পরিদর্শনে গিয়েও সুপার ইয়ারুল হক সহযোগিতা করেননি। তিনি শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্র দেননি। বরং যতবার সিআইডি’র তদন্ত দল মাদ্রাসায় গিয়েছে ততবারই সুপারসহ শিক্ষকরা পালিয়েছেন। গতরোববারও তাদের মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যাক্ষদর্শী আতিয়ার রহমান জানান, সোমবার দুপুরে সিআইডি’র তদন্ত দল মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে সুপারসহ ৬/৭ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। কিন্ত সিআইডির আসার খবরে শিক্ষক বাবুল হোসেন, রুহুল আমনি, মসলেম উদ্দীন, সাইফুর রহমান, জিয়া, খায়রুল ইসলাম ও আবু সালেহ ওল্টু পালিয়ে যান। এই দৃশ্য দেখে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারফলসি গ্রামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২২ সালের ৬ জুলাই মাদ্রাসাটি রাতারাতি এমপিও ভুক্ত হলে বর্তমান সুপার ইয়ারুল হক হঠাৎ আর্বিভুত হন সুপার হিসেবে। এরপর দাবী করে বসেন প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খলিলুর রহমান তাদের নিয়োগ দিয়ে গেছেন।
এ নিয়ে এলাকায় শোরগোল শুরু হলে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে কনক মন্ডল মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি ঝিনাইদহ সিআইডি তদন্ত করছে। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দপ্তরী হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মনজের আলী জানান, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল এই ১০ বছর পর্যন্ত বর্তমান সুপার ইয়ারুল হক মাদ্রাসায় ছিল না। এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর তিনি রাতারাতি উড়ে এসে জুড়ে বসেন।
মামলার বাদী কনক মন্ডল জানান, সুপার ইয়ারুল একজন বাটপার ও চতুর মানুষ। তিনি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ইয়াসমিন সুলতানার সাক্ষরে নিয়োগ পেয়েছেন বলে দাবী করেন। কিন্তু ইয়াসমিন সুলতানা সিআইডির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনি সুপারসহ কাউকেই নিয়োগ দেননি।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার ইয়ারুল হক বলেন, “কোথায় কবে নিয়োগ বোর্ড বসেছিল তা তার এখন মনে নেই” এ কথা বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
ঝিনাইদহ সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আব্দুর রহিম জানান, নিয়োগের বিষয়টি জাল বলে মনে হচ্ছে। সিআইডি তথ্য প্রমান সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, দ্রুত এই মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.