আর.কে.বাপ্পা, দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত নদী ইছামতির বাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে৷ যার কারনে কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। গত কয়েকমাসে উপজেলার প্রায় ৮ কিলোমিটারের মতো সীমান্ত ঘেষা ইছামতী নদীর বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করে সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে। যতসামান্য কাজও কিছু করা হয়েছে। কিন্তু কয়েকমাস পার হলেও স্থায়ী বাধ বা পাকা ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ রক্ষায় কার্যকারী কোন কাজ শুরু না হওয়ায় ইতিমধ্যে ভাঙ্গনকৃত স্থানে আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
উপজেলার কোমরপুর এলাকার বেড়িবাঁধে আবারো ধ্বস দেখা দিয়েছে। যার কারনে ঐ এলাকার স্থানীয় জনগনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল ইছামতি নদীর ভাঙ্গন প্রবণ এলাকা কোমরপুরের বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আ. ন. ম. বজলুর রশীদ।
তিনি এসময় বেড়িবাঁধ সংষ্কারের কাজ পরিদর্শন করেন। এছাড়াও উপজেলার টাউনশ্রীপুর, শীবনগর, বসন্তপুর ও নাংলা এলাকার কিছু বাধ হুমকির মুখে রয়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষেরা সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের খাওয়া ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইছামতি নদীর পানির চাপে ৭/৮ টি গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানান।
তারা বলেন, অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ এবং গুটিকয়েক মানুষের ঠেলা জাল নদীতে ফেলার কারণে দেবহাটার সীমান্ত নদীর বাঁধ অনেক ভেড়িবাধ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক অতিবর্ষন বাঁধটিকে আরও দুর্বল করে ফেলেছে। গ্রামবাসী আরও জানান, চিংড়ি চাষীরা খেয়াল খুশী মতো ছোট বাঁধ দিয়ে মুল বাঁধের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। বেড়ি বাঁধের গা ঘেঁষে পোনা ধরা এবং বালু তোলার কারণে বাঁধটি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ন হয়ে ওঠে। গত কয়েকবছরে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আমাদের দেশের অনেক জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের শীবনগরের পাশে রাজনগর মৌজা ইছামতির নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কোমরপুরের ভাঙ্গনকৃত বেড়িবাঁধ সরেজমিনে পরিদর্শনের সময দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ মহিদুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেবহাটার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ মহিদুর রহমান জানান, কোমরপুর এলাকায় ১০০ মিটার, ভাতশালা এলাকায় ২০০ মিটার পাকা ব্লক ফেলানো এবং সুশীলগাতী ও শ্যামনগরের কাটামারি এলাকায় বালির বস্তা ফেলানোর জন্য একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই কাজের টেন্ডার হবে বলে তিনি জানান।
উক্ত প্রকল্পের জন্য ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ করা হয়েছে বলে শেখ মহিদুর রহমান জানান। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা বলেন, দেবহাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে যে এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ন সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাসহ পরিদর্শন করে দ্রুত সংস্কার ও মেরামতের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে ইউএনও মিলন সাহা জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.