শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভিকটর ভিলেজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত পরিবেশ দূষণের অভিযোগ তদন্তে এবার মাঠে নেমেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৪ টা হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট শাখার সহকারী পরিচালক ইয়াসমিন আক্তার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. ইমরান হোসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন।
এর আগে চলতি বছরের ৮ মে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু স্হানীয় প্রশাসন এ সমস্যার কোন সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারেনি।
উজানচর ইউনিয়নের মইজদ্দিন মন্ডল পাড়া বেরিবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বিশাল আয়তনের এ ভিকটর ভিলেজ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণ, আবাদী জমি ধ্বংস, বসতভিটা দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে।
ভিলেজের আশপাশ এলাকার ২৭৫ জন ভুক্তভোগী ব্যাক্তি অভিযোগ পত্রে গণস্বাক্ষর করেন। অভিযোগের অনুলিপি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, পরিবেশ অধিপ্তরের মহা-পরিচালক, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ৩০টি দপ্তরে প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগে আবাদি কৃষি জমি নষ্ট করে ভিক্টর ভিলেজে মুরগির খামার গড়ে তোলা, মুরগির বিষ্ঠা হতে সৃষ্ট দুর্গন্ধ, খামারের ময়লা আবর্জনা দ্বারা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকাসহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা না থাকা, যত্রতত্র মুরগির বিষ্ঠা ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা, মরা মুরগী, নষ্ট বাচ্চা, পচা ডিম ধ্বংসের ব্যবস্থা না থাকা, স্যাঁতস্যাঁতে আবর্জনার দুর্গন্ধ বাতাসে রোগ ছড়ানোর কথা বলা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রব বলেন, ভিকটর ভিলেজের কারনে অনেক আবাদি জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলায় আমাদের তিন ফসলি জমির উর্বরতা কমে গেছে। আগের মতো অনেক জমি এখন আর চাষাবাদ করাই যায় না। বিকট দুর্গন্ধের কারনে এলাকার মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আশপাশের কৃষিজমি দখল করে প্রতিষ্ঠানটি সেড নির্মাণ করেছে। রাতের আধারে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করায় জমি দখল হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমির সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন বলে আমরা আশা করি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভিকটর ভিলেজের সত্ত্বাধিকার মো. রহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আমার নিজের জমিতেই সেড নির্মাণ করেছি। প্রয়োজনে ডিজিটাল সার্ভেয়ার দিয়ে সার্ভে করে দেখুক। কিছু কুচক্রী মহল আমার ব্যবসায়িক সুনাম ও ব্যাপারকে ক্ষতি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে।’
পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইয়াসমিন আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে পরিদর্শনে এসেছি। এটা নিয়ে যখন আদেশ দেই, তখন কি আদেশ দিলাম সেটা নিয়ে হয়তো রিপোর্ট হতে পারে। এখন কি রিপোর্ট হবে?
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.