দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শীতকালীন সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন চাষীরা। এ অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় আগামজাতের কপি চাষ করে তারা এ সাফল্য পাচ্ছেন।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ সব কপি চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতি বিঘা জমিতে কপি বিক্রি করে লাভ হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা বা তারও বেশী, যা উৎপাদন খরচের প্রায় দ্বিগুন।
কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া, হোগলবাড়িয়া, মথুরাপুর ও দৌলতপুর সদর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে চাষ হয়েছে ফুলকপি ও বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন সবজি।
ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে কৃষকদের খরচ হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমির কপি বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার টাকায়। কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাহিদা বেশী থাকায় বাজারে দাম বেশি। তাই লাভও হচ্ছে বেশি।
উপজেলার আদাবড়িয়া ইউনিয়নের গরুড়া গ্রামের কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, শীতে আগাম জাতের ৭ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপি চাষ করেছেন। এর মধ্যে ২ বিঘা জমির ফুলকপি বিক্রি করেছেন ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায়। বাঁকী ৫ বিঘা জমির কপি বিক্রির উপযোগী হয়নি এখনও। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে তার মাত্র ৩০ হাজার টাকা। দুই বিঘায় লাভ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ টাকা।
আমিরুল ইসলাম নামে অপর কৃষক বলেন, ৭ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি এবং ফুলকপি চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছিল বিঘাপ্রতি ৩০ হাজার টাকা। বিক্রি করেছি সাড়ে ৩ বিঘা জমির কপি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায়। এখনও সাড়ে ৩ বিঘা জমির কপি আছে, বাজার দর ভালো, ভালো দামের আশাও করছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক সামিরুল ইসলাম বলেন, আগে তামাক চাষ করতাম, কপি অনেক লাভজনক আবাদ হওয়ায় ২ বিঘা জমিতে কপি লাগিয়েছি। ১ বিঘা জমির কপি বিক্রি করেছিলাম ৮০ হাজার টাকায়। আড়াই থেকে ৩ মাসের আবাদ শীতের মৌসুমে ভালো হয় যা ক্ষতিকর তামাক চাষের চেয়ে ভালো।
উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের কৃষক ওবাইদুল ইসলাম বলেন, আমি ৩ বিঘা ফুলকপি লাগিয়েছি, তাতে প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে বিঘা প্রতি ৩৫ হাজার টাকা লাভ হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক জানান, এক সময় এ অঞ্চলের কৃষকরা অর্থকরী ফসল হওয়ায় ক্ষতিকর তামাক চাষে আগ্রহী ছিল। তামাকের কুফল সম্পর্কে সচেতন করাতে পেরে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ে তাদের। তাই তারা তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে অর্থকরী ফসল সবজি চষে আগ্রহী হয়েছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে তিনি কৃষকদের পাশে রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, এবছর দৌলতপুরে শীতকালীন কপির চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪২ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে চাষ হয়েছে ২৬০ হেক্টর জমিতে। প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে দৌলতপুরে বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষ, তাতে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষকদের শীতকালীন কপি চাষে উদ্বুদ্ধকরন, পরামর্শ সহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।
কৃষি নির্ভর দৌলতপুর উপজেলায় প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষ। এর সুফল ভোগ করছেন কৃষকরা। পরনির্ভরতা কমাতে প্রয়োজন প্রণোদনাসহ সবধরণের সুবিদা প্রদান।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.