দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে মাদক পাচারকারী জনি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সীমান্তের শীর্ষ সন্ত্রাসী লালু সহ ২জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রাম হাইওয়ে এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এনিয়ে জনি হত্যা মামলার ৪জন আসামি গ্রেপ্তার হলো। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন জামালপুর গ্রামের ছামুর ছেলে জনি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও সীমান্তের শীর্ষ সন্ত্রাসী লালু (৪৬) এবং তার অন্যতম প্রধান সহযোগি হত্যা মামলার ৫নম্বর আসামি ও একই এলাকার কাবের আলীর ছেলে নাজমুল (৩৫)। হত্যাকান্ড ঘটিয়ে তারা ভেড়ামারা থেকে বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাচ্ছিলো বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন।
গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসীরা সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার পাশাপাশি অপরাধ জগতের সিন্ডিকেট গড়ে তোলে নির্বিগ্নে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।
শুধুমাত্র মাদক পাচারকারী জনি হত্যাকন্ডের মামলা নয়, এদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, অস্ত্র ও মাদকের মামলা রয়েছে। প্রভাশালীদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে এরা অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে জনি হত্যা মামলার আরও দুই আসামি জামালপুর গ্রামের মৃত দুল্লোর আলীর ছেলে সিকান্দার আলী (৬০) এবং জাহিদুল ইসলামের ছেলে আসিফ হোসেন (১৫) কে গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া কবরস্থানের পাশ থেকে পুলিশ জনির লাশ উদ্ধার করে। নিহত জনি একই ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন জামালপুর গ্রামের মৃত জাকির হোসেনের ছেলে। সে সীমান্ত এলাকার মোহন হত্যা মামলার প্রধান ও পলাতক আসামি এবং মাদক পাচার কাজে জড়িত ছিল।
গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়েনের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া এলাকায় কবরস্থানের পাশে দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে মাদক পাচারকারী জনি (৩০) কে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়।
জামালপুর সীমান্তের চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী সোহান, সুমন, লালু, নাজমুল সহ ৪০-৪৫ জন এ হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। নিহত জনি ছিলেন জামালপুর এলাকার মৃত জাকির হোসেনের ছেলে।
জনি দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর সীমান্তের সোহান ও সুমনের অস্ত্র এবং মাদক বহনের কাজ জড়িত ছিল। মাদক পাচারের পাওনা টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সোহান ও সুমনের লোকজন জনিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপয়ে জখম করে। এতে সে গুরুতর আহত হয় এবং তার পিঠে একাধিক সেলাই দিতে হয়।
হামলার ভয়ে জনি শুক্রবার রাতে মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া এলাকায় অবস্থান করে। পরদিন শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে জনি নিজ বাড়ি জামালপুর গ্রামে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে জনির দুই পায়ের রগ কেটে দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া পুলিশের একটি টিম নাজমুল ও লালুকে নাটোরের বড়াইগ্রাম হাইওয়ে এলাকা থেকে আটক করে সোমবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করেছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে আজ মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন জানান, জনি হত্যা মামলার ১ ও ৫ নম্বর আসামি ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আমার একটি টিম তাদের গ্রেপ্তার করেছে। বাঁকী আসামিদের ধরতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.