চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা গেট সংলগ্ন লিটনের হোটেলের পেছনের একটি ডোবা (পরিত্যক্ত পুকুর) থেকে কামাল উদ্দিন (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় রহস্য ও নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল ১০টার দিকে এক ব্যক্তি ডোবায় একটি ডুবন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজনকে জানান। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত কামাল উদ্দিন দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের বদনপুর গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসে পিয়ন হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং প্রায় ১৪–১৫ বছর আগে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অবসরের পর থেকেই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন এবং ২ থেকে ৫ দিন পর ফিরে আসতেন। অনেক সময় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতেন। কামাল উদ্দিন মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) আসরের নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন।
পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দামুড়হুদা মডেল থানায় এসে মরদেহটি সনাক্ত করেন এবং এটি তাদের পিতার মরদেহ বলে নিশ্চিত করেন। নিহত কামাল উদ্দিন ৬ ছেলে ও ১ মেয়েসহ মোট ৭ সন্তানের জনক। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আনোয়ারুল কবির, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দিনসহ পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা।
এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনাটি রহস্যজনক। তাদের মতে, মরদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সুমন আলী জানান, নিহত কামাল উদ্দিন তার প্রতিবেশী ছিলেন। মঙ্গলবার বেলা ৩টার পর তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। বুধবার দুপুর ২টার দিকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থানায় এসে মরদেহ সনাক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারুল কবির বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় নিশ্চিত করেছে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি যৌথভাবে তদন্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

