মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় দসত্বর এলাকায় যেখানে নেই কোন মানুষের বসবাস কিংবা কোনো বাড়িঘর না থাকলেও খালি ফসলি জমিতে সরকারি বরাদ্দে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। ফসলি জমি কেটে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা চলছে রাস্তা নির্মাণের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের দসত্বর এলাকায় বেকু মেশিন দিয়ে উর্বর ফসলি জমি কেটে বসতি বিহীন জায়গায় রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে ।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই এলাকার চকের মাঝ খানে প্রথমে একটি পুকুর খনন করা হয়। এরপর পুকুরের পাশে একটি জমি ভরাট করা হয়। সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো বসতি বা বাড়িঘর নির্মাণ না হলেও, ভবিষ্যতে বাড়ি নির্মাণের কথা বলে সরকারি অর্থের বরাদ্দে সেখানে যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
যেখানে এখনো কোনো মানুষের বসবাস নেই, সেখানে রাস্তা নির্মাণ কতটা যৌক্তিক—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারা আরও জানান, প্রকৃত জনস্বার্থে যেখানে রাস্তার প্রয়োজন, সেখানে বরাদ্দ না দিয়ে জনবসতিহীন এলাকায় রাস্তা নির্মাণ রহস্যজনক।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি জমি ধ্বংস করে ব্যক্তিগত জমির সুবিধা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি অর্থের অপব্যবহারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, রাস্তা নির্মাণের কাজটি করছেন পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বেপারী ও ইউপি ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ ছৈয়াল এই দুইজনের পরিকল্পনায় কাজটি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্যে মাসুদ ছৈয়াল বলেন, এখানে বসতি নেই। কিন্তু পনের দিন পরে বাড়ি ঘড় হবে। তাছাড়া কাজটি আপাতত নিজের টাকা খরচ করে করছি। কাজ হওয়ার পরে সরকারি বরাদ্দ আসলে টাকা সমন্বয় করা হবে। প্রয়োজন হলে কাজ বন্ধ করে দিবো। বরদ্ধা আসলে কাজ করবো।
পাঁচগাও ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আবু সিদ্দিক বেপারী বলেন, সেখানে কোন বাড়ি ঘর নাই আমি জানি, মেম্বার বরদ্ধা চাইছে আমি দিয়ে দিছি।
যাচাই-বাছাই করে দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাচাই-বাছাই করা হয়নি। আপনি যখন বলছেন মেম্বারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে কাজ বন্ধ করে দিবো।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ওয়াজেদ ওয়াসিফ জানান, আপনার কাছ থেকে বিষয়টি জানলাম। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া মমতাজ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। যেহেতু বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফসিল জমি রক্ষায় ও ব্যক্তিস্বার্থ কাজ বন্ধ করে এলাকাবাসী দ্রুত এ বিষয়ে প্রশাসনের তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। যাতে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয় এবং ফসলি জমি রক্ষা করা যায়।

