আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নিবন্ধিত জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৫–২০২৬ অর্থবছরে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত)-এর আওতায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টার দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা মৎস্য দপ্তরের আয়োজনে এ বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১২টি গ্রুপের মাধ্যমে মোট ৬০ জন নিবন্ধিত জেলের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত নূর মৌসুমী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. খায়রুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. খায়রুল ইসলাম বলেন,“জেলেদের জীবনমান উন্নয়ন এবং দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান অত্যন্ত জরুরি। বকনা বাছুর পালনের মাধ্যমে জেলেরা স্বাবলম্বী হবে এবং ভবিষ্যতে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও রিফাত নূর মৌসুমী বলেন,“সরকার জেলেদের শুধু মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল রাখতে চায় না। বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করে জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। এই উদ্যোগ তারই একটি অংশ।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তরুণ বসু। তিনি বলেন,“এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে একদিকে যেমন জেলেদের আয় বাড়বে, অন্যদিকে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রাহানুর রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবেন বাইন এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা।
বকনা বাছুর পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সুফলভোগী জেলে মোহাম্মদ আলিম ঠাকুর। তিনি বলেন,“আমরা সারাজীবন শুধু মাছ ধরেই চলেছি। এখন গরু পেয়ে মনে হচ্ছে সংসারে নতুন একটা ভরসা এলো।”
অপর জেলে মিন্টু শেখ বলেন,“নিষেধাজ্ঞার সময় খুব কষ্টে থাকতে হয়। এই গরুটা থাকলে তখন সংসার চালাতে অনেক সুবিধা হবে।”
আরেক জেলে দীপংকর মালো বলেন,“সরকার আমাদের কথা ভেবেছে—এটাই সবচেয়ে বড় কথা। গরু পালন করে আয় বাড়াতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।”
অনুষ্ঠান শেষে বকনা বাছুর গ্রহণ করে জেলেরা সন্তোষ ও আনন্দ প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে জেলেরা বিকল্প কর্মসংস্থানে যুক্ত হয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন এবং প্রাকৃতিক জলাশয়ের ওপর অতিরিক্ত চাপও কমবে।

