রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার-এর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ এবং গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে ‘খুলনায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
লেখক, সাংবাদিক ও গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই হামলা কোনো একটি গণমাধ্যমকে লক্ষ্য করে নয়; এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত।
বক্তারা বলেন, আজ তাঁরা কোনো নির্দিষ্ট পত্রিকার পক্ষে দাঁড়াননি; তাঁরা দাঁড়িয়েছেন সত্যের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে। সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ একটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা, যার লক্ষ্য ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে স্তব্ধ করে দেওয়া।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ‘কোনো গণমাধ্যমের ওপর আঘাত মানে আমাদের বিবেক ও হৃদয়ে আঘাত। প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের ওপর হামলা মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনার ওপরও আঘাত।’
খুলনার সাংবাদিকরা বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিকরা বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর তাঁরা আশা করেছিলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আর রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে না। কিন্তু শাসনের পরিবর্তন হলেও ফ্যাসিবাদী আচরণ ও মানসিকতার অবসান হয়নি।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নয়—এটি একটি মানসিকতা। যেখানে এই মানসিকতা থাকবে, তার বিরুদ্ধেই সাংবাদিকরা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সোচ্চার থাকবেন।
মানববন্ধনে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এই ঘটনার নেপথ্যে কারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তা প্রকাশের আহ্বান জানান বক্তারা। তাঁরা বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না হলে সরকার ব্যর্থ প্রমাণিত হবে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব অনেকটাই সাংবাদিকদের নিজেদেরই নিতে হচ্ছে। দল-মত ও মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে সাংবাদিক পরিচয়কে সামনে রেখে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।
তাঁদের ভাষ্য, অতীতে গণমাধ্যমে হামলার ঘটনায় যদি ধারাবাহিকভাবে জোরালো প্রতিবাদ গড়ে তোলা যেত, তাহলে হামলাকারীরা নতুন করে কোনো গণমাধ্যমে আঘাত হানার আগে বহুবার ভাবতে বাধ্য হতো।
মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা (এমইউজে)-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন খুলনা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক, এমইউজে খুলনার সভাপতি ও মানবজমিন-এর স্টাফ রিপোর্টার মো. রাশিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটির সভাপতি কৌশিক দে, খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি আবু হেনা মোস্তফা জামাল পপলু, নয়াদিগন্ত-এর ব্যুরো প্রধান মো. এরশাদ আলী, সমকাল-এর খুলনা অফিস প্রধান আবুল হাসান হিমালয়, এমইউজে খুলনার কোষাধ্যক্ষ ও খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম মতি, যমুনা টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান শেখ আল-এহসান, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সহসভাপতি ও আজকের পত্রিকা-র নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী শামীম আহমেদ, একুশে টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম নূরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক নেতারা।
এছাড়া খুলনার জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে
কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.