সুব্রত সরকার, মহম্মদপুর (মাগুরা)
মাগুরার মহম্মদপুর সদর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্দিষ্ট কসাইখানা না থাকায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কসাইখানার অভাবে মাংস ব্যবসায়ীরা বাজারের আশপাশে যত্রতত্র পশু জবাই করছেন। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে রোগগ্রস্ত পশু জবাইয়ের মাধ্যমে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্দিষ্ট জবাইখানা না থাকায় অনেক সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই গরু, ছাগল ও মহিষ জবাই করা হচ্ছে। ফলে বাজারে বিক্রি হওয়া মাংসের মান ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এতে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন মহম্মদপুর একটি প্রাচীন জনপদ। এটি রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানী হিসেবেও পরিচিত। ১৮৬৯ সালের ২৪ নভেম্বর মহম্মদপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এটি উপজেলায় উন্নীত হয়। ঐতিহাসিক এই জনপদে একাধিক মন্ত্রীর জন্মও হয়েছে।
বিশিষ্ট নাট্যকার, গবেষক ও কবি সালাহউদ্দীন আহমেদ মিলটনের লেখা “মহম্মদপুর উপজেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য” গ্রন্থে উল্লেখ আছে, ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে যশোর জেলার সদর দপ্তর মহম্মদপুরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ থেকেই ব্রিটিশ আমলে মহম্মদপুরের গুরুত্ব প্রতীয়মান হয়। তবে নানা কারণে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি, যার ভোগান্তি আজও উপজেলাবাসীকে পোহাতে হচ্ছে।
মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ফলে মহম্মদপুর বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক করিডোরে পরিণত হয়েছে। মাগুরা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার ছোট-বড় পণ্যবাহী যানবাহন নিয়মিত এই পথ ব্যবহার করছে। পাশাপাশি মহম্মদপুরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরাও আসছেন। এতে বাজারের গুরুত্ব ও জনসমাগম দিন দিন বাড়ছে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে কসাইখানা না থাকাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইয়াকুব আলী বলেন,“আমরা আগের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কসাইখানা স্থাপনের জন্য আবেদন করেছিলাম। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন, কিন্তু বাস্তবে আজও কসাইখানা হয়নি।”
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বলেন,“মহম্মদপুর বাজারে একটি আধুনিক কসাইখানা এখন সময়ের দাবি।”
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মৈমুর আলী মৃধা বলেন,“আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক বিজয়ী হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই বাজারে একটি কসাইখানা স্থাপন করা হবে।”
এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহ. শাহনুর জামান বলেন,“আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করবো। বাজারে কসাইখানা না থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি কসাইখানা স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় দ্রুত মহম্মদপুর বাজারে একটি আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত কসাইখানা স্থাপন করা হোক।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.