রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় জেঁকে বসেছে পৌষের কনকনে শীত। ভোর থেকে রাত সারাক্ষণই শীতের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়ছে নগরবাসী। তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে গরম কাপড় কেনায় ঝুঁকছেন মানুষ। তবে শপিং মলের চেয়ে ফুটপাথ ও পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতেই ক্রেতাদের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে। এসব দোকানের ক্রেতাদের বড় অংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
পৌষ মাসের ১৩ দিন পার হলেও গত কয়েকদিন ধরে খুলনায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ‘পৌষের শীত মোষের গায়’ প্রবাদের বাস্তব প্রতিফলন যেন টের পাচ্ছেন নগরবাসী।
নগরীর ডাকবাংলো হার্ডমেটাল গ্যালারি এলাকা থেকে শুরু করে ক্লে রোড মোড় পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাথ, ভ্যান ও অস্থায়ী দোকানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, মাফলারসহ নারী ও শিশুদের নানা ধরনের শীতবস্ত্র বিক্রি করছেন।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে মুখর এসব এলাকা। তবে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবার গরম কাপড়ের দাম বেশি বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
খালিশপুর পিপলস গেট এলাকা থেকে গরম কাপড় কিনতে আসা করিম উদ্দিন বলেন, অনেক জায়গা ঘুরেও পছন্দের জ্যাকেট কিনতে পারেননি। জব্বার মার্কেটের একটি দোকানে দাম শুনে হতাশ হয়ে ফিরে যান তিনি। তার ভাষায়, “পুরোনো জ্যাকেটের দাম নতুনের চেয়েও বেশি বলছে, তাই কিনিনি।”
সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মো. আকাশ অভিযোগ করে বলেন, “শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় গরিবের মার্কেট বলে পরিচিত জব্বার মার্কেটে এসেছি। এখানে এক দোকানি ৮০০ টাকার জ্যাকেটের দাম চেয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে এসব দাম দিয়ে কেনা সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে জব্বার মার্কেটের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, “হঠাৎ শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিক্রি অনেক বেড়েছে। কয়েকদিন আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ বিক্রি হচ্ছে। দোকানে ফ্যাশনেবল নানা ধরনের জ্যাকেট রয়েছে।
বিশেষ করে প্যাডিং জ্যাকেটের চাহিদা বেশি, মোটরসাইকেল চালকদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়।”
তিনি আরও বলেন, “গত বছরের তুলনায় এবার বেলের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি পড়েছে, সে কারণে শীতবস্ত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে।”
এদিকে জব্বার মার্কেটের তুলনায় দাম কম হওয়ায় ফুটপাথের দোকানগুলোতেই বেশি ভিড় করছেন ক্রেতারা। এসব দোকানে মানভেদে বড়দের শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় এবং শিশুদের জন্য শীতবস্ত্র মিলছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।
মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ফুটপাথের এসব দোকান এখন একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে। অনেককেই পরিবারের একাধিক সদস্যের জন্য শীতবস্ত্র কিনতে দেখা গেছে এসব দোকান থেকে।

