Nabadhara
ঢাকাসোমবার , ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুলনা জেলা কারাগারে ভোটে আগ্রহ দেখালেন মাত্র ১৪ শতাংশ বন্দি

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫ ২:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি

একশ তেরো বছর পর ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে খুলনা জেলা কারাগার। এই প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কারাবন্দিরা।

তবে ভোটাধিকার পেলেও বন্দিদের বড় একটি অংশ এতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মোট বন্দির মধ্যে মাত্র ১৪ শতাংশ ভোট দিতে আগ্রহী, আর ৮৬ শতাংশ বন্দি ভোটদানে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক কারণে অধিকাংশ বন্দি চলমান নির্বাচনকে নেতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক বন্দি ভোটদানে অংশ নিতে চান না। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বন্দিদের বড় একটি অংশ ভোটদানে আগ্রহ দেখাননি বলেও জানা গেছে।

ঔপনিবেশিক আমলে স্থাপিত খুলনা জেলা কারাগার ভারত ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। দুটি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, দুটি পতাকার পরিবর্তন এবং একাধিক রাজনৈতিক উত্তাল সময় পার করলেও এতদিন এই কারাগারে বন্দিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ হয়নি। ব্রিটিশ আমলের সাব জেলের সেই রীতিনীতির ভেতর এবার ভোটদানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়াকে কারাজীবনের এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতিহাসবিদ অজিত কুমার নাগ রচিত ‘স্বাধীনতার সংগ্রামে খুলনা’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯০৫ থেকে ১৯১১ সালের মধ্যে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে খুলনা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। তৎকালীন দৌলতপুর হিন্দু একাডেমী—বর্তমান বিএল কলেজ—এই আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

যশোরের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সংগঠক যতীন্দ্র নাথ মুখার্জী ওরফে বাঘা যতীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এ সময় খুলনায় গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।

এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যক্ষ কামাখ্যা বরণ নাগ, হরিদাশ মুখার্জী, তারকনাথ চ্যাটার্জী, বেণীভূষণ রায়, জিলা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ইন্দুভূষণ মজুমদার, সেনহাটির শহীদ অনুজা চরণ সেন, ডুমুরিয়ার শোভনার শহীদ চারুচন্দ্র বসুসহ আরও অনেকে। সে সময় যশোরের মুড়লী থানা ও খুলনা থানা থেকে বন্দিদের আলীপুর কারাগারে পাঠানো হতো, যা ছিল অত্যন্ত দুঃসাধ্য এবং স্বজনদের জন্য ভোগান্তিকর।

১৯০৯ সালে ভারতের আলীপুর কারাগারে চারুচন্দ্র বসুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে এবং বন্দির সংখ্যা ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় খুলনায় নতুন কারাগার স্থাপনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এরপর ভৈরব নদের তীরে ১৯১২ সালে খুলনা জেলা কারাগার স্থাপন করা হয়। তখন ভারতবর্ষের শাসনভার ছিল ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের হাতে।

কারাগার স্থাপনের পর থেকে ১৯৪৬, ১৯৫৪, ১৯৬৫, ১৯৭০, ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও কোনো নির্বাচনে কারাবন্দিরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই প্রথমবারের মতো এই সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, খুলনার দুই কারাগার মিলিয়ে বর্তমানে বন্দির সংখ্যা ১ হাজার ২৩৬ জন। এর মধ্যে ১৭৮ জন ভোট দিতে সম্মতি জানিয়েছেন। বন্দিদের মধ্যে দুজন ভারতীয় নাগরিক, পাঁচজন জঙ্গি, ৪০ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, প্রায় ৫০০ জন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি এবং বাকিরা হাজতি।

খুলনা জেলা কারাগারের সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, “বন্দিরা খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, মাগুরা, সাতক্ষীরা, যশোর ও গোপালগঞ্জ জেলার ভোটার। বন্দিদের ভোটদানে প্রাথমিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কারাগারের সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলারসহ ৩২২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে।”

তিনি আরও জানান, তিনি নিজে নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের ভোটার হলেও নানা জটিলতার কারণে এখনও ভোটার হিসেবে নাম নিবন্ধন করতে পারেননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অনেক বন্দির জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা এবং নির্বাচনের আগে জামিন পাওয়ার আশা থেকে ভোটদানে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রভাবও ভোটে অংশ না নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইতিহাসের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে খুলনা জেলা কারাগারে ভোটাধিকার কার্যকর হলেও, বাস্তবতায় রাজনৈতিক অনাস্থা ও নানা জটিলতায় বন্দিদের বড় অংশ ভোটের বাইরে থেকেই যাচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।