মেজবা রহমান,স্টাফ রিপোর্টারঃ
পবিত্র রমজানে মহাগ্রন্থ আল – কোরআন অবতীর্ণ হওয়ায় মাস৷ এ মাসেই সমগ্র কোরআন একত্রে প্রথম আসমানে লিপিবদ্ধ করা হয়। সেখান থেকেই এই গ্রন্থ প্রয়োজনাসারে মহানবী হজরত মুহাম্মদ স. এর উপর অবতীর্ণ হয়। সিয়াম সাধনার এই মাসকে মহান আল্লাহ তায়া’লা কোরআনের জন্যই মহিমান্বিত করেছেন।
বছরের অন্যান্য সময় থেকে কিছুটা হলেও রমজানে মানুষ ধর্ম চর্চায় আত্মনিয়োগ করে ।আর ঠিক এসময়েই পবিত্র কোরআন শিখছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রমজানের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন এই উদ্যোগ নেয়। পরে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ে এই পাঠ্যক্রম জোরালো ভাবে শুরু হয়৷ সরেজমিনে দেখা যায় যে, প্রতিদিন জোহরের নামাজের পরে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা পারিশ্রমিকে কোরআন শেখাতে লেগে যান মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মুয়াজ্জিন মাওলানা আঃ রহিম। এসময়ে প্রতিদিনের খতম তারাবির আলোচ্য তাফসীর সহ পবিত্র কোরআনের তালিম দেওয়া হয়। মধ্যাহ্নের তীব্র গরমের মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণ শিক্ষার্থীদের কোরানের সূরের মাধুরীতে মুখোরিত হয়ে ওঠে। এদিকে রমজানে কোরআন শিখতে ছাত্রদের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই ছাত্রীরাও। তাদের মধ্য থেকে ধর্মভীরু অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে মহিলা শিক্ষকের কাছে কোরআন শিখছেন। তাদের তেলওয়াতের শুরে মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল প্রাঙ্গণ। এ বিষয়ে মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রমজান মাসে অন্যান্য সময়ের থেকে শিক্ষার্থীরা একটু বেশী ধর্মের প্রতি আগ্রহী হন। তাছাড়াও এসময়ে তাদের পড়াশোনার চাপ কিছুটা কম থাকে। তাদের এই মূল্যবান সময়কে আরও মূল্যবান করতে, আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।ইতিমধ্যে প্রায় ত্রিশ জন দেখে দেখে কোরআন পড়া শিখেছে। আশাকরি,বাকি শিক্ষার্থীরাও দ্রুত শিখবেন৷ কোরআন শেখার পাঠ্যক্রমে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জানান, সারা বছর আমরা একাডেমিক নানা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকি। রমজানে কিছুটা হলেও এর চাপ কম থাকে৷ তাই এ সময়কে কাজে লাগাতে নিয়মিত কোরআন শিখছি। আরেক শিক্ষার্থী কৌসিক হাসান জানান, ছোট বেলা থেকেই অনেক ইচ্ছে ছিল, কোরআন শিখবো। ইতিমধ্যে দেখে পড়ার বিষয়টা অনেকখানি আয়ত্ত করতে পেরেছি। রমজানে মাসে এমন মহত উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এদিকে রমজানের শুরুতে শিক্ষার্থীদের নামাজ ও কোরআন পাঠের সুবিধার্থে পুরো মসজিদে এসির ব্যবস্থা করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব।
শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগের কথা শুনে তিনি বলেন , আমার শুনে অত্যন্ত ভালো লাগছে যে, আমাদের শিক্ষার্থীরা রোজা থেকে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি কোরআন শিখছে৷ আশাকরি তার দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। আমি তাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি৷