কিডনী জটিলতার কারনে গোপালগঞ্জের সময় টিভির সাংবাদিক আমির হামজা (৪৩) এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। পাঁচ মাস আগে তার দুটো কিডনীতে সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে দুটো কিডনীর ৯৫ ভাগ অকেজো হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত দেশের বাহিরে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে তার পক্ষে বিদেশ দূরে থাক, দেশের মধ্যেই চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এদিকে, সাংবাদিক পিতার জীবন বাঁচাতে ও উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানিয়েছে আমির হামজার একমাত্র মেয়ে গোপালগঞ্জের যুগশিখা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী নাহিয়ান রহমান রোদেলা।
কান্না জড়িত কন্ঠে রোদেলা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা না থাকলে আমরা কিভাবে বাঁচবো ? আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে! প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় আমার বাবার চিকিৎসার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন। মহান রাব্বুল আলামিনের পরে তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসার জায়গা।
সাংবাদিক আমির হামজার সহধর্মিনী ইরাকী খানম (৩৫) বলেন, পাঁচ মাস আগে আমার স্বামী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।দ্রুত আমরা তাকে খুলনায় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই।সেখানে শারীরিক ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় তার কিডনী সমস্যা ধরা পড়ে। আমরা তখন সেখানে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হই। পরে ওই চিকিৎসকের অধীনে কিছুদিন চিকিৎসা চলে। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আমার স্বামীকে ঢাকায় নিয়ে যাই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি রোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের অধীনে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভি,সি ও ওই হাসপাতালের ন্যাপরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের অধীনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাতেও অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি।
আমাদের কাছে যাকিছু ছিল এবং আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে এপর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে আসছি। এখন আমি কি করব, কোথায় যাব, কার কাছে যাব, কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি না। একমাত্র মেয়ে নাহিয়ান রহমান রোদেলা (১৪) ও শ্বাশুরীকে নিয়ে আমাদের সংসার। স্বামীর একার আয়ে আমাদের সংসার চলে। মেয়ে সপ্তম শ্রেনীতে পড়ালেখা করছে। স্বামীর অসুস্থতার কারনে বর্তমানে সংসারে নানান টানপোড়েন চলছে। স্বামীর চিকিৎসা, সংসার ও মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছি।
আমির হামজা প্রায় দুই দশক ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত। বর্তমানে তিনি সময় টেলিভিশনের গোপালগঞ্জে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন।