সামসুল হক জুয়েল, গাজীপুর প্রতিনিধি
বিখ্যাত কবি, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও ছড়াকার কবি আসাদ বিন হাফিজ মারা গেছেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ভাতিজা নেছারউদ্দিন মাসুদ।
গতকাল রোববার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে রাজধানী ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি র্দীঘদিন যাবৎ বিভিন্ন শারিরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
গত ২৯ জুন শনিবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে হাসপাতালে র্ভতি করা হয়। পরে রোববার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটি তিনি মারা যান।
তার জানাজার নামাজ আজ সোমবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদে জোহরের পর প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় এবং আছরের নামাজের পর কবির গ্রামের বাড়ি বড়গাঁওয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে কবিকে তাঁর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গোছেন। উল্লেখ্য, কবি আসাদ বিন হাফিজ ১৯৫৮ সলের ১ জানুয়ারি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বড়গাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবি হিসেবে তিনি ফররুখ আহমদকে অনুসারণ করতেন। ছোটবেলা থেকেই ইসলামি সাংস্কৃতকি র্চচায় আগ্রহী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর সাহিত্যে বাংলার মুসলিমি সমাজের পুর্নজাগরণ এবং বিপ্লবের অনুপ্ররেণা প্রকাশ করেছেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সৃজনশীলতার পাশাপাশি তিনি সাহিত্যে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহারেও অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। লেখাপড়া: কবি আসাদ বিন হাফিজ শৈশবে নিজ গ্রামের বড়গাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখোপড়া করেন এবং বাড়ির পাশের মক্তবে আরবি শেখেন। পরে র্পাশ্বর্বতী গ্রাম সাওরাইদ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখ করেন। তাদের মধ্যে সবার বড় ভাই অধ্যাপক ইউসুফ আলী নরসিংদী কলেজে অধ্যাপক থাকাকালীন কবি সেখাকার ব্রাহ্মনদী কলিজিয়েট হাইস্কুলে ভর্তি হন। পরে বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে যান এবং তেজগাঁও পলিটেকেনিক্যাল স্কুলে ভর্তি হন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ফরিদাবাদ হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং এখান থেকেই তিনি মানবিক বিভাগে এসএসসি পাশ করনে । ঢাকা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি র্অজন করেন। কবি আসাদ বিন হাফিজ কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, গবেষণা, সম্পাদনাসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখাতেই অসামান্য প্রতভিার স্বাক্ষর রেখেছেন । তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৮১। উল্লখেযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘কি দেখো দাঁড়িয়ে একা সুহাসিনী ভোর’ এবং ‘অনিবার্য বিপ্লবের ইশতেহার’।
কবি আসাদ বিন হাফিজ তাঁর র্বণাঢ্য র্কম ও সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ কলম সেনা পুরস্কার (১৯৯৪), কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এমইউ আহমেদ পুরস্কার (১৯৯৭), বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ পুরস্কার (১৯৯৭), ছড়ার ডাক পদক ও সম্মাননা (২০০৪), মেলোডি শিল্পিগোষ্ঠী পদক (২০০৪), কিশোর কণ্ঠ ও সাহিত্য পুরস্কার (২০০৪), গাজীপুর সংস্কৃতি পরিষদ কৃতী সংর্বধনা (২০০৪) সহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষতি হয়েছেন। সামসুল হক জুয়েল ০১৮৩৪৩১০৯৯৯ গাজীপুর ০১ জুলাই ২০২৪ ইং