নাইমুল ইসলাম কল্লোল, স্টাফ রিপোর্টারঃ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ লকডাউনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে আগামীকাল ( ১৮ জুলাই) থেকে পাঁচটি রুটে বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে পরিবহন প্রশাসক তাপস বালার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞাপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে নিজস্ব বাসে বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছে দেয়ার উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের গন্তব্যের পাঁচটি রুটে ভাগ করা হয়েছে।
১)গোপালগঞ্জ-ভাটিয়াপাড়া-মাছকান্দি-মাগুরা-ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-নাটোর-বগুড়া-রংপুর
২)গোপালগঞ্জ-ভাঙ্গা-ফরিদপুর-রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া-দাশুড়িয়া- লালপুর- বাঘা-রাজশাহী
৩) গোপালগঞ্জ-মাওয়া-ঢাকা-গাজীপুর-মাওনা- ময়মনসিংহ
৪)গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট-মোস্তফাপুর-গৌরনদী-বরিশাল- পটুয়াখালী ও
৫) গোপালগঞ্জ-খুলনা- যশোর- নাভারণ- সাতক্ষীরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব এর নির্দেশনায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিসের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ১৩ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যলায় প্রশাসন থেকে আরও জানানো হয়, শুধুমাত্র যে সকল শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ শুধুমাত্র তারাই এই বিশেষ বাস সার্ভিসে নিজেদের বাড়িতে যেতে পারবেন।তবে যাদের কোভিড-১৯ নমুনা পরিক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসবে তারা বিশ্ববিদ্যলায় থেকে বাস সার্ভিস এর অন্তর্ভুক্ত হবেনা।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিজ নাম ও এলাকা উল্লেখসহ ১৭ তারিখের মধ্যে ভলান্টিয়ারদের পরিবহন অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক তাপস বালা বলেন, শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছাতে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মানবিক দিক থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
তবে খোজ নিয়ে জানা গিয়েছে, করোনাকালীন সংকটে গোপালগঞ্জে আটকে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৩ শিক্ষার্থীকে বাড়িতে বাসে পৌঁছে দেয়ার কোন ব্যবস্থা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরমধ্যে কুমিল্লার ১৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ০৯ জন, চট্টগ্রামের ০৭ জন, চাঁদপুরের ০৭ জন, নোয়াখালীর ০৯ জন, লক্ষ্মীপুরের ০২ জন ও কক্সবাজারের ০১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
চাঁদপুরের শিক্ষার্থী সৌমিন সৈকত দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৩ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে আমাদের করোনা টেস্ট করানো হয়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে করোনা টেস্ট করি। করোনা টেস্ট করানোর পরে অধিকাংশ বিভাগেই বাস দেয়া হলেও আমাদের চট্টগ্রাম বিভাগে কোনো বাস দেয়া হয়নি। এদিকে এ বিভাগের যেসব শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জে আটকে আছে তারা কিভাবে বাড়ি পৌঁছাবে সে বিষয়ে প্রশাসন থেকে কোনো দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়নি। এতোদিন অপেক্ষা করানোর পর এখন এসে এরকম সিদ্ধান্ত দেয়াটা কতোটা যুক্তিযুক্ত? আমরা অতি দ্রুত এর সমাধান চাই।
পরিবহন প্রশাসক তাপস বালা এ বিষয়ে নবধারা কে বলেন, আমরা মূলত যেসব রুটে আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি সেসব রুটেই গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্তেই আমরা এ রুটসমূহ নির্ধারণ করেছি।
পরে ৫৩ জন শিক্ষার্থীর কথা বলা হলে উত্তর তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই কুমিল্লার। এক্ষেত্রে কুমিল্লাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার শিক্ষার্থীরা আমাদের ঢাকাগামী বাসে গিয়ে তারপর গন্তব্যে যেতে পারেন।