পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের শিকারপুর এলাকার ব্যাংক কলোনীর গৃহবধু প্রিয়াঙ্কা সমাদ্দার (২৬) ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েই করোনার কাছে হেরে গেলেন। মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে খুলনা আড়াইশ বেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এর তিনদিন আগে প্রিয়াঙ্কার মা হাসি তালুকদার করোনায় আক্রান্ত হয়ে পিরোজপুরের কাউখালীর নিজ বড়িতে বসে মারা যায়। আজ বিকেলে প্রিয়াঙ্কাকে তার বাবা-মায়ের সমাধীর পাশে সমাহিত করা হয়।
এদিকে তার স্বামী অগ্রণীব্যাংক কর্মকর্তা তন্ময় সমদ্দারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রিয়াঙ্কার আরও একটি ৪ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়ে দুটিকে নিয়ে আত্মীয়-স্বজনরাও পড়েছেন বিপাকে।
স্বামী তন্ময় সমদ্দারের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৫বছর আগে পারিবারিক ভাবে তন্ময়ের সাথে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তারা সুখী ছিলেন। হঠাৎই প্রিয়াঙ্কার জীবনে অমানিশা নেমে আসে। ২মাস আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত তার বাবা বিমল তালুকদার মারা যান। শুরু হয় একের পর এক মৃত্যু মিছিল। বাবার মৃত্যুর দেড় মাসের মাথায় পরিবারটির উপর ছোবল হানে করোনা। প্রিয়াঙ্কা দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ায় তাকে কাউখালী মায়ের কাছে রেখে আসা হয়। সেখানেই সে ও তার মা করোনায় আক্রান্ত হয়। পরে তার স্বামী তন্ময় সমাদ্দার করোনায় আক্রান্ত হয়। গর্ভবতী হওয়ায় প্রিয়াঙ্কাকে খুলনা আড়াইশ বেড হাসাপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রিয়াঙ্কা হাসপাতালে থাকা অবস্থায় এদিকে তার মা হাসি তালুকদার করোনায় মারা যান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়েআটটায় প্রিয়াঙ্কা মারা যায়। এর আট ঘন্টা আগে দুপুরে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছিলেন।
সৎকার কার্যে অংশগ্রহণকারী সমাজ সেবক আব্দুল লতিফ খসরু নবধারা কে বলেন, সৎকারের সময় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। দুই মাসের মাসের মধ্যে একটি পরিবারের তিনটি লাশের সমাধী করা হলো। ভুমিষ্ট শিশু জন্মেই মাকে হারালো।