Nabadhara
ঢাকাসোমবার , ৩ নভেম্বর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মঠবাড়িয়ায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্ত শুরু

নাইম উদ্দিন আকন পিরোজপুর প্রতিনিধি
নভেম্বর ৩, ২০২৫ ৪:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মহসিন প্যাদা (৪৮) নামে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে উপজেলার ১৪০ নং হোগলপাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

সম্প্রতি মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম হোগলপাতি গ্রামের এক অটোচালকের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে শিক্ষক মহসিন প্যাদা। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা গত উপজেলা শিক্ষা অফিসে এবং ২ নভেম্বর মঠবাড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এ সকল অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর ও মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ পৃথক ভাবে রোববার ওই ১৪০ নং হোগলপাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্তে যান বলে ওই ছাত্রীর মা সোমবার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত ৭ অক্টেবার স্কুল ছটি শেষে অতিরিক্ত পড়ানোর অযুহাতে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন প্যাদা। ঘটনার পরের দিন ওই ক্লাষ্টারের এটিও (সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা) সাথে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন প্যাদা বিদ্যালয়ে পাঠদানে অংশগ্রহণ না করে এটিওর সাথে বেড়িয়ে যান। এ ঘটনার পর থেকে ওই স্কুল ছাত্রী ও তার আশেপাশের ছাত্রীরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষরা এক ধরনের মুসলেকা দিয়ে শিশুদের পাঠদানে ফেরান। এদিকে কর্মকর্তারা তদন্তকালে জানতে পারেন শিক্ষক মহসিন প্যাদা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে একাধিক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে আসছে।
সম্প্রতির এ ঘটনায় জনশ্রতি রয়েছে এটিওকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে একদিনের মধ্যে তিনি ১৩১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয়ে যান। বিষয়টি জানা জানি হলে এলাকায় এবং গোটা শিক্ষাঙ্গনে তোলপাড় ও নিন্দার ঝড় ওঠে।

চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী ভীরু কন্ঠে বলেন, “সেদিন স্কুল ছুটি হয়ে যায়। কিন্তু আমাকে মহসিন স্যার বলে ৭ ঘরের নামতা লিখতে। আমি আমার দুজন সহ পাঠিকে দাড়াতে বলি যে, তোর একটু দাড়া, আমি নামতা লিখে আসতেছি। ওরা রুমের বাহিরে দাড়িয়ে ছিলো। স্যার বার-বার ওদের ধমক দিচ্ছিলো তোমরা চলে যাও, ও একটু পরে যাবে। তখন স্যার আমার পিছনে দাড়িয়ে তার যৌনাঙ্গ আমার পিছনে ঠেকিয়ে দেয় ও মুখে বলে ভালো করে লেখ। পরে পায়জামার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে আমার কোমর চাপে। এরপর পিছন থেকে হাত দিয়ে আমার বুকে চাপ দেয়। এর মধ্যে বাড়ি যাবার জন্য আমার সহপাঠিরা রুমের সামনে এলে স্যার আমাকে ছেড়ে দেয়। পরে আমি দ্রুত স্কুল থেকে বেড়িয়ে পরি।

শিশুটির মা কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন, সেদিন ৭ অক্টোবর বিকেলে মেয়ে বাড়িতে এসে গালমন্দ করে বলে আমি আর স্কুলে যাব না। আমার মেয়ের শারীরিক গঠন ভালো তাই আমার সন্দেহ হয়। আমি জিজ্ঞেস করতেই কেঁদে ফেলে। এরমধ্যে ওর সহপাঠী এস বলে মহসিন স্যার ওরে নামতা লেখার জন্য আটকিয়ে রেখে ছিলো। এরপর আমি মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে, মেয়ে সব খুলে বলে। পরে আমার অটোচালক স্বামীকে বিষয়টি অবগত করি। তিনি বেশ কয়েকজনকে বিচার দেয়। কিন্তু তারা অজ্ঞাত কারনে বিচার করেন নি। এ ঘটনার পর আমার মেয়ে ও আশপাশের মেয়েরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে স্কুলের অনুশ্রী রানীসহ দুই ম্যাডাম আমার আমাদের বাড়িতে আসেন। এসময় তারা বলেন, আমার আপনার মেয়ের উসিলায় মুক্তি পেয়েছি। লম্পট শিক্ষকের জন্য আমরাও ভালো ছিলাম না। মহসিন স্যার যেহেতু স্কুলে নাই অন্যত্র বদলী হয়ে গেছে। এখন সবাইকে স্কুলে যেতে বলবেন।

একই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর মা এবং প্রবাসির স্ত্রী বলেন, মহসিন মাস্টার তার মেয়েকে যৌন নিপীড়ন করেছে। স্বামী প্রবাসে থাকায় এবং অন্য কোন অভিভাবক না থাকায় মেয়েকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বুঝিয়ে-শুনিয়ে স্কুলে পাঠিয়েছি। মাস্টার প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের কথা কেউ বিশ্বাস করে কিনা, এমন সন্দেহে মুখ খুলিনি। এ কুত্তা কখনো মানুষ হবে না।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) অনুশ্রী রানী বলেন, ৭ অক্টোবরে ছাত্রীর সাথে কি হয়েছিলো আমারা তা দেখিনি তবে শুনেছি। এ ঘটনার পর থেকে মহসিন স্যার স্কুলে আসেন। আমি এবং অপর এক ম্যাডাম ওই ছাত্রী এবং আশপাশের ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীদের স্কুল মুখি করাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মহসিন প্যাদা কোন সদুত্তর দিতে না পেরে বার-বার কসম খান। নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন।

এ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এটিও (সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা) মো. ইউনুস আলী অভিযুক্ত শিক্ষক মহসিন প্যাদার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি বলে জানান। এক দিনের মধ্যে কেন বদলি করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন নির্দিষ্ট সদুত্তর দিতে পারেন নি। ফোন কাটার পরেই তিনি বিয়ষটি নিয়ে বিভিন্ন জনকে দিয়ে সুপারিশ করান।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মনসুর হোলাল অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।