মোঃ জিহাদুল ইসলাম, নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চোরখালী গ্রামে মৃত বিল্লাল বিশ্বাসের ছেলে ইয়ার বিশ্বাস (৬০) নামে আশ্রয়গ্রহীতা ওয়ারীশ সুত্রে সুযোগ বুঝে ভূয়া ষ্ট্যাম্প বানিয়ে টিপসহি নকল করে অর্থের বিনিময়ে আদালতের রায় কার্যকর করে আশ্রয়দাতার বসতভিটা ভেঙ্গে নিজের স্থাপনা ওঠানোর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নিঃসন্তান মৃত ছাদ ইমানী বিশ্বাসের ওয়ারেশগণ।
তারা আরো জানান ওই ভূয়া ষ্ট্যাম্পে লিখে নেওয়া ৩৬০ দাগের ৯ শতক জমি নিয়ে স্থাণীয় শালিসদের ম্যানেজ করে তার পক্ষে রায় করিয়ে কোর্টের সরনাপন্ন হয় ইয়ার বিশ্বাস এবং নোটিশ গোপন করে আমাদের কিছুই না জানিয়ে ২৩ মে/২১ নিজের নামে একতরফা রায় করিয়ে নিয়ে আসে। ৩০ আগষ্ট (সোমবার) বিকেলে ওই বসত ভিটায় সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার চোরখালী মৌজায় সাবেক ৩৬০ নং দাগের মূল মালিক মধুসুধন দাসের নিকট থেকে মৃত এবাদত বিশ্বাসের ছেলে ছাদ ইমানী বিশ্বাস ওরফে নজর আলী বিশ্বাস ১১ জুন/১৯৫৮ সালে কবলা দলিল মূলে ১৮ শতক জমি খরিদ করে দখলদার হন। ওই সময় ইয়ার বিশ্বাসের পিতা বিল্লাল বিশ্বাস অসহায় অবস্থায় ছাদ ইমানীর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তার ১৮ শতকের পূর্ব পাশে বসবাসের অনুমতি দেন। ছাদ ইমানীর মৃত্যুয়ান্তে তার স্ত্রী নিহার বিবি ও ভ্রাতা সাবান উদ্দিন বিশ্বাসকে ওয়ারীশ হিসাবে রেখে যান। ছাদইমানীর ওয়ারীশগন ২০১৬ সালে জানতে পারেন দখল সূত্রে ইয়ার বিশ্বাস গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তারই প্রেক্ষিতে ইয়ার বিশ্বাসের সাথে মৃত ছাদ ইমানী পরিবারের দ্বন্দ্বের সুত্রপাত হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান। অর্থের বিনিময়ে সে সমস্ত জায়গা ম্যানেজ করে ভূয়া ষ্ট্যাম্পে নকল টিপসহি দিয়ে কোর্টের রায় নিয়ে আসে অথচ আমাদের সঠিক দলিল পর্চা থেকেও ন্যাজ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এ কারণেই গত ৩/৪ মাস পূর্বে মৃত ছাদ ইমানীর একমাত্র ভ্রাতা সাবান উদ্দিন বিশ্বাসও আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত সাবান বিশ্বাসের ছেলে জুয়েল বিশ্বাস, সোহেল বিশ্বাস, রুবেল বিশ্বাস, রানা বিশ্বাস ও মেয়ে সুরাইয়া খাতুন বলেন, আমরা অশিক্ষিত গরীব মানুষ কামলা খেটে খাই, জমি সম্পর্কে ভাল বুঝিওনা, একজন ভুমিহীনকে আশ্রয় দিয়ে আজ আমরা পুরো পরিবার ভুমিহীন হতে চলেছি। তারা আরো বলেন, আমার বাবা সাবান বিশ্বাসের নিকট আমার চাচা ছাদইমানী বিশ্বাস কখনো বলে যান নাই যে, ইয়ার বিশ্বাসের বাবাকে উনি ষ্ট্যাম্পে ৯ শতক জমি লিখে দিয়েছেন। তাহলে ইয়ার বিশ্বাস ষ্ট্যাম্প পেলো কোথায়? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইয়ার বিশ্বাস দলিল থাকার বিষয়টি বললেও দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং পরবর্তীতে তিনি ষ্ট্যাম্পে খরিদের বিষটি নিশ্চিত করলেও সাংবাদিকদের সেটা দেখাননি। তবে তিনি বলেছেন, ছাদ ইমানী বিশ্বাস আমার বাবা বিল্লাল বিশ্বাসকে তার দেওয়া ৯ শতক জমি দলিল করে দিতে না পারায় ষ্ট্যাম্পমুলে আমাদের জমির দখল বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু ওনার মৃত্যুর পর ওয়ারেশরা ঝামেলা করায় আমি আদালতের আশ্রয় নিয়ে আমার দখল নিশ্চত করি।