মোঃ আসাদুজাজামান আসাদ, স্বরুপকাঠী প্রতিনিধিঃ
আমি ৩৬ বছর ধরে সবজি চারা উৎপাদনের সাথে জড়িত।বংশ পরম্পরায় ২০০ বছর ধরে এ এলাকার মানুষ ভাষমান পদ্ধতিতে সবজি চারা উৎপাদন করে আসছে।আমিও আমার বাবার দেখানো পথেই ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চারা উৎপাদন করে আসছি।কিন্ত সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা আমি পাইনি। কেহ পায় কিনা তাও জানিনা। আমার কোনো কৃষি কার্ড নেই তাই ব্যাংকে নেই কোনো কৃষি একাউন্ট। কথাগুলো বলছিলেন বানরিপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউপির কুলাতলা গ্রামের মোঃ মজনু মিয়া (৫৬)। মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) বলেন সবজি চারা উৎপাদনের জন্য পানির উপরে আইল তৈরীতে কচুরিপানা,টেপাপোনা,দুলালীলতা সহ যা কিছু প্রয়োজন সবই পুরুষরা যোগান দেয়। কিন্ত ছোটো ছোটো দলা তৈরী ও দলার মধ্যে বীজ বপন করার কাজ ঘরের মহিলারাই করেন। সে হিসেবে শুধু কুলাতলা গ্রামেই ২ শতাধিক কৃষক ও কৃষানী রয়েছে। কিন্ত এসকল কৃষকরা বরাবরই সরকারি সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে জানা যায় সরকার কৃষকদের উন্নয়নের জন্য প্রান্তিক কৃষকদের অগ্রাধিকার দিয়ে গত ২০২০ সনের ৫ মে মাত্র ৫% সুদে কৃষি প্রনোদনা হিসেবে ৫০০০ কোটি টাকা, চলতি বছরে ২৪ আগস্ট ৪% সুদে ৩০০০ কোটি টাকার প্রনোদনা প্যাকেজ ঋন প্রদানের অনুমতি দেয়। এখান থেকে কোন অর্থ সহযোগিতা বা ঋন সুবিধা পাওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে একজন কৃষকের অবশ্যই কৃষি কার্ড থাকতে হবে এবং ব্যাংকে ১০টাকার বিনিময়ে কৃষি একাউন্ট থাকতে হবে।কৃষি কার্ড না থাকায় সরকারের প্রদেয় সার বিজ কৃষি উপকরন সহ সহয শর্তে প্রদেয় কৃষি ও পল্লীঋন থেকে বঞ্চিত এ এলাকার কৃষকরা।
ভাষমান সবজি চারা উৎপাদন ও এ অঞ্চলের কৃশকদের নিয়ে দির্ঘদিন ধরে সংবাদ পরিবেশনকারী মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন। দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় একটি দেশের গ্রাম পর্যায়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে উৎপাদিত এসকল সবজি চারা ও কৃশকদের নিয়ে যত সংবাদ হয়েছে তা বিরল। তিনি বলেন এসকল কৃশকরা যদি সরকারের প্রদেয় কৃষি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় তা দেশের কৃষি মন্ত্রনালয়ের জন্য লজ্জাকর।
চ্যানেল সিক্স বরিশাল প্রতিনিধি সাংবাদিক জুয়েল সরকার বলেন দেশের এমন কোনো ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া বা প্রিন্ট মিডিয়া নেই যারা এ অঞ্চলের ভাষমান সবজি চারা উৎপাদন নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেননাই। এসব কৃষকের জীবমান উন্নয়নে সাংবাদিকরা নিরন্তর চেস্টা করে যাচ্ছে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে।কৃষি অধিদপ্তর এদেরকে কৃষক হিসেবে তালিকাভুক্ত না করা সাংবাদিকসহ সকলের জন্যই লজ্জাজনক।
নিজেদের মেধা ও চেস্টায় কয়েক পুরুষ ধরে বছরের ৯ মাস ৫/৬ ফুট পানিতে নিমজ্জিত জমিতে সবজির চারা উৎপাদন করা এসকল কৃষকদের ব্যাপারে ওই এলাকার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন এখানকার ভাসমান সবজি চারা উৎপাদনকারি কৃষক কৃষানীর কারোরই কৃষি কার্ড নেই। যে কারনে তারা সরকারের কৃষি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন কৃষকদের উন্নয়নে এ এলাকার কৃষকদের কৃষি কার্ড করানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।