সাইফুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল–৩ (বাবুগঞ্জ–মুলাদী) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা ও আয়কর রিটার্ন বিশ্লেষণে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময়ে দায়ের হওয়া প্রায় ২৫টি মামলার আসামি ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তবে অধিকাংশ মামলায় তিনি আদালত থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন এবং জামিনে মুক্ত রয়েছেন বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়ের উৎস হলফনামায় উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাত থেকে বছরে তার আয় ৮০ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ২৭ লাখ ৫৬ হাজার ৯৬৪ টাকা। এছাড়া আইন পেশা থেকে তার বার্ষিক আয় ৩৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। সর্বশেষ দাখিল করা আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, তার মোট বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ৭০ লাখ ৫৬ হাজার ৬১৭ টাকা।
নগদ অর্থ ও ব্যাংক জমা হলফনামা অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের কাছে নগদ অর্থ রয়েছে মাত্র ৩৩ হাজার ৭১৯ টাকা। তবে তার গৃহিণী স্ত্রীর কাছে নগদ রয়েছে ৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৪৩ টাকা।
বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৮ লাখ ৭ হাজার ৪৬৫ টাকা। তার স্ত্রীর ব্যাংক জমা রয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৩ টাকা। এছাড়া তার নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রয়েছে ৪২ লাখ ৭৯ হাজার ৭১১ টাকা। স্ত্রীর নামেও ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়পত্র ও আমানত রয়েছে, যার পরিমাণ ১২ লাখ টাকার বেশি।
জমি ও স্থাবর সম্পত্তি হলফনামা অনুযায়ী, পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত কৃষি জমির পরিমাণ ৩ একরের বেশি। রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভার এলাকায় রয়েছে ২৭ শতাংশ জমি। মুলাদী উপজেলায় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ৪৯ শতাংশ জমির ওপর বসতভিটা রয়েছে। ঢাকার ইস্টার্ন প্লাজায় তার মালিকানাধীন ১ হাজার ১৭৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ভবনের অংশ রয়েছে, যার ঘোষিত মূল্য ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়া নিজ জেলা বরিশালের বাড়ি রোড এলাকায় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ২ দশমিক ৮১ শতাংশ জমি ও ভবনের মালিক তিনি।
এর বাইরে যৌথ মালিকানাধীন ১৩ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের একটি সম্পত্তির অর্ধেক অংশের মালিকানা রয়েছে তার নামে, যার বাজারমূল্য ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বেশি বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মোট সম্পদ ও দেনা সব মিলিয়ে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের ঘোষিত মোট সম্পদের আনুমানিক মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বেশি। একইভাবে তার স্ত্রীর নামে থাকা সম্পদের আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকার বেশি।
তবে এত সম্পদের পাশাপাশি দেনার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। হলফনামা অনুযায়ী, তিনি মোট ৩০ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।
অন্যান্য তথ্য হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের ব্যক্তিগত ব্যবহৃত কোনো গাড়ির তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। একই সঙ্গে কোনো ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বা আসবাবপত্রের বিবরণও সেখানে পাওয়া যায়নি।

