মোঃ জিহাদুল ইসলাম, কালিয়া, নড়াইলঃ
নড়াইলের নড়াগাতী থানার মহাজন উত্তর পাড়ায় বিদ্যার দেবী স্বরস্বতীর মুর্তি ভাংচুরের ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার ৮ দিনে ও কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া তো দুরের কথা পুলিশ সন্দেহ ভাজন কাউকে আটক করতে পারেনি। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার অযুহাতে ভাঙ্গা মুর্তি কাপড়ে ঢেকে রেখে উপজেলার মাউলী ইউপির সদস্য ও ইউনিয়ন পুজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক সজল ঠাকুর সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও ভাঙ্গা মুর্তির ছবি তুলতে নিষেধাজ্ঞার কথা অস্বীকার করেছে। উপজেলার মাউলী ইউনিয়ন পুজা উৎযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তুষার বৈদ্য সাংবাদিকদের ভাঙ্গা মুর্তির ছবি সরবরাহ করে ছবি তুলতে না দেয়ার তিব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এমন একটি স্পর্শকাতর ঘটনায় প্রশাসনের নিরবতা আমাদের ব্যাথিত করেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারী রাত ৮ টার দিকে অজ্ঞাত নামা দুস্কৃতকারিরা মুর্তিটির নাক ও একটি হাত ভাংচুর করে পালিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ননড়াগাতী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু ৮ দিনে ও কোন দুস্কৃতকারীকে আটক করতে পারেনি।
অপরদিকে ঘটনার পরদিন সকালে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গিয়ে কাপড়ে ঢাকা মুর্তি দেখতে পেয়ে কাপড় সরিয়ে ছবি তুলতে গেলে সজল ঠাকুর সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাধা দিয়ে বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধ রয়েছে, কাজেই ছবি তোলা যাবে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। রহস্যজনক ভাবে মুর্তি ভাংচুর ও ভাঙ্গা মুর্তি কাপড়ে মুড়ে রাখার ঘটনায় স্থানীয়রা নিন্দা জানিয়েছেন। রহস্যজনক কারনেই ভাঙ্গা মুর্তি কাপড়ে মুড়ে মন্দির কর্তারা ও স্থানীয় প্রশাসন অনৈতিক ভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছে বলে তাদের অভিযোগ রয়েছে।
ওই মন্দিরের পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি লিমন বিশ্বাস বলেছেন, মুরুব্বিদের কথামত ভাঙ্গা মুর্তি মেরামত করেই তারা পুজার আয়োজন সম্পন্ন করবেন। কালিয়া উপজেলা পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি আশোক কুমার ঘোষ বলেছেন, তিনি ওই মুর্তি ভাংচুরের ঘটনা জানেন না। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ অজানা আতংকে ভুগছে। রহস্যজনক ভাবে মুর্তি ভাংচুর ও ভাঙ্গা মুর্তি কাপড়ে মুড়ে রাখার ঘটনায় স্থানীয়রা মুখ খুলতে নারাজ। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহাজন বাজারের কিছু স্থায়ী ব্যাবসায়ী, শ্রমিক ও সচেতন মহলের অনেকের ধারনা, আগামী ইউপি নির্বাচনে মাউলী ইউয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে সজলের প্রতিদ্বন্দি হিসাবে ১০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী আত্মপ্রকাশ করেছে। সম্ভাব্য সদস্য প্রার্থীদের কাউকে ঘায়েল করতে ওই মুর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটানো হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
তাদের মতে, সে কারনেই হয়ত ভাঙ্গা মুর্তি কাপড়ে মুড়ে এভাবে লুকোচুরি খেলছে মন্ডপ কর্তৃপক্ষ।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে নির্বাচনে ফায়দা লুটার জন্যই এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওছি) মোসাঃ রোকসানা খাতুন বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি তবে মুর্তি ভাঙ্গার মত স্পর্শকাতর বিষয়ে আমাদের তদন্তের পাশাপশি গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।