মেজবা রহমান;স্টাফ রিপোর্টারঃ
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এক অদম্য গুণের নাম। বঙ্গবন্ধু প্রেমিকেরা কৌতুহল মনে জানতে চায় তার জীবন গল্প। ইতিমধ্যে এই গল্প দেশবাসীকে জানাতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু কর্ণার। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) লাইব্রেরির বঙ্গবন্ধু কর্ণারটি একটু ব্যতিক্রম।
বঙ্গবন্ধু সংবলিত সহস্রাধিক বই আর তার জীবন গল্পের পাতা থেকে নেওয়া ঐতিহাসিক স্থির চিত্র যেন মুজিব জীবনের অতলস্পর্শী প্রশ্নের সমাধান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির গ্রাউন্ড ফ্লোরে ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চালু করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’। শুরুতে অল্প সংখক বই নিয়ে এর যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে বই রয়েছে প্রায় ১৩০০। এসব বই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, ইতিহাস, কল্পকাহিনী ও উপন্যাস নিয়ে রচিত। এই বঙ্গবন্ধু কর্নারের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য লেখকদের বই বঙ্গবন্ধুকে আরো কাছ থেকে জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়াও কর্ণারটিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবন থেকে সংগৃহীত দেশে–বিদেশে স্মৃতি বিজড়িত প্রায় পাঁচ শতাধিক স্থিরচিত্র। পাশাপাশি রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন প্রতিবাদী ও পাক বাহিনীর নির্যাতনের স্থিরচিত্র। সবমিলিয়ে কর্ণারটি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে জানতে চাওয়া যে কোনো জ্ঞান পিপাসুর কৌতূহল মিটিয়ে দিবে। ক্যাম্পাস খোলা থাকাকালীন লাইব্রেরির এই অংশটিতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে চাওয়া আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখানে ভিড় জমায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইয়ের মাঝে ডুবে থাকেন তারা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে জেনে মেটাতে পারে তাদের জ্ঞান তৃষ্ণা। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু কর্ণারে শিক্ষার্থীদের মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করতে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা কর্নারটিকে সুসজ্জিত করে প্রয়োজনীয় বসার ব্যাবস্থাসহ সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের নিশ্চিত করেছে। বঙ্গবন্ধু কর্ণার নিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নিপা খানম তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু কর্ণারটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনীর মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার একটি বিশেষ অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী শেখ আব্দুর রহিম বলেন, লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্ণার তৈরি করার ফলে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারছে। পাশাপাশি কর্নারটি তাদের নৈতিকতা ও মননশীলতার উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত করতে ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক মো. নাছিরুল ইসলাম বলেন, আমদের লাইব্রেরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান এই বঙ্গবন্ধু কর্ণার। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা এখানে আসে। তারা বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানতে এই কর্ণারটিতে ভিড় জমায়।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু কর্ণারকে নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যথা শিরগিরই কর্ণারটির বর্ধিতকরণে এই একটি কক্ষ বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ একটি ফ্লোরে স্থাপন করবো। বহুসংখ্যক বই আসলেও জায়গায় অপর্যাপ্ততার কারণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রায় ছয় লাখ টাকার বইয়ের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব এগুলো সংগ্রহ করা হবে।