নবধারা ডেস্কঃ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনিরা ভেবেছিলো বাঙালী আর কোন দিন মাথা তুলে দাঁড়াবে না এবং জাগবে না। কিন্তু শক্রুর মুখে ছাই দিয়ে জাতির পিতাi কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাঙালী শুধু জাগেইনি পৃথিবীতে শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির অগ্রপৃথিক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। একারণেই তিনি মাদার অব হিউম্যানিটি নামে অভিহিত হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনায় সারা পৃথিবী যখন ধুকে ধুকে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা করোনাকে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করেছি। করোনার সময় প্রত্যেকের ঘরে খাবার ও সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষকে বিকাশের মাধ্যমে সহযোগিতা পাঠিয়েছেন। এটাই হলো পরম মমতায় জনগনের পাশে দাঁড়ানোর। এটা জাতির পিতা কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।
তিনি অারো বলেন, সবাই ভেবেছিলো রোহিঙ্গাদের চাপ আওয়ামী লীগ সরকার কুলাতে পারবে না। সেখানেও তিনি সফলতা ও দক্ষতার প্রমান দিয়েছেন। বিএনপি আমালে এই রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এসেছিলো। বর্তমানের তুলনায় সেটা ১0 ভাগের এক ভাগ। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলো বেগম খালেদা জিয়া। আমি অনুরোধ করবো সেই সময়কার সরকারী ছবি দেখুন। গিয়েছিলে বেগম সাহেব। একটা বাচ্চাকে নতুন কাপড় পড়িয়ে উনার কোলে দেয়া হয়েছে। উনি ছবি তুলে চলে এসেছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সেই কক্সবাজার টেকনাফে যান, সেখানে আমরা দেখেছি ধুলি ধুসর একটি রোহিঙ্গা ছেলেকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন। এটাই হলো শেখ হাসিনা। যখন শেখ হাসিনার হাতে দেশ পথ হারাবে না বাংলাদেশ। পথ হারাবে না কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতা, সাধারন মানুষ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী কৃষিবীদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করেন বলেছেন, যারা ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন কমিশন মানে না, ইলেকশন করবে না, আবার গাড়ি পোড়াবেন, মানুষকে দগ্ধ করবেন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করবেন। তাদেরকে বলে দিতে চাই ৭১ সালে আমরা আপনাদেরকে মোকাবেলা করেছি। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে মোকাবেল করেছি। আবার ইনশাল্লাহ এই কৃষকলীগ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে আপনাদের মোকাবেলা করবে। বাংলার মাটিতে আর হরতাল হবে না। কাউকে হত্যা করতে পারবেন না। বাংলাদেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ করবো সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করবো।
দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা মহামারি সত্ত্বেও দেশে কোন খাদ্য সংকট, কোন আহাজারি নেই। গত এক দেড় মাস আগে আমি খোঁজ নিয়েছি কোন মোটা চালের দাম বাড়ে নাই। মোটা চালের দাম ৪৩, ৪৪ টাকা। সরু চালের দাম প্রথম দিকে বেড়ে ৬৫, ৬৬ টাকায় আছে। তবে শাকসবজি, তেল, চিনি দাম বেড়েছে। তেল বিশেষ থেকে আনতে হয়। এর জন্য তেলের দাম বেড়েছে। আমরা তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করি না। ৯০ ভাগ তেল বিদেশ আনতে সরকারকে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়। আর এ গুলো আনে বেসরকারি কোম্পানী। তারা লাভ না হলে আনবে না। সারা পৃথিবীতে ট্রাক ভাড়া, জাহাজ ভাড়া বেড়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এক কোটি মানুষ তেল, ডাল, চিনি দিচ্ছি। আমরা আপ্রান চেষ্টা করছি। কিন্তু যারা হুমকি দিচ্ছে এই সুযোগে এখানে আমাদের কোন হাত নাই। আওয়ামী লীগ জনগনের সাথে ছিলো, থাকবে। কারণ আওয়ামী লীগ ওই গুলশান বা ক্যান্টমেন্টের ভিতরে দল না। আওয়ামী লীগ গ্রামের দুঃখি মানুষের খাদ্য পৌছে দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকারের সময় সারের শুধু অভাব হয়নি। সার চাইতে গিয়ে এদেশের কৃষক জীবন দিয়েছেন। ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই বুলেটের জবাব এদেশের কৃষক শ্রমিক জনতা ব্যালটের মাধ্যমে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছে।
কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে অীন্যান্যের মধ্যে কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, কেন্দ্রীয় অাওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি শরীফ অাশরাফ অালী, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে অালম সিদ্দিক, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমান, সাধারন সম্পাদক অাব্দুর রহমান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মিলন মোল্লাসহ কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
পরে দোয়া, মোনাজাত ও জন্মদিনের কেক কাটেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এর আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও কৃষিমন্ত্রী কৃষিবীদ ড. আব্দুর রাজ্জাক দলীয় নেতাকর্মিদের সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।