নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামে মিথ্যা ছাগল চুরির দায়ে দুই যুবককে গাছে বেঁধে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মারধর এর এ লোমহর্ষক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই যুবক -ওই গ্রামের আঃ রশিদ শেখ এর ছেলে মো. ফরিদ শেখ ও আঃ রউফ শেখ এর ছেলে তরিকুল ইসলাম।
স্থানীয় ও ভূক্তভোগীদের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, ১৪ মে (শনিবার) দিনগত রাতে একই গ্রামের আব্দুল হাই মুন্সীর ছাগল হারিয়ে গেলে পরদিন রোববার (১৫ মে) সকালে ইউপি সদস্য আবুল কালামকে জানালে তিনিসহ ৭/৮ জনের একটি দল ওই দুই যুবকের বাড়ী এসে তাদেরকে কাজ করানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে বোচা শেখের ছেলে নান্নু শেখের দোকানের পাশে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন চালায় এবং তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়। কিন্তু সেই হারানো ছাগল পশের গ্রাম লুটিয়ায় একটি বাড়ীতে পাওয়া যায়। ছেলে দুটিকে অহেতুক দোষারুপ ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবী করেন তারা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভূক্তভোগীরা জানান, ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য ও একই গ্রামের জাফর মুন্সীর ছেলে আবুল কালাম মুন্সির নেতৃত্বে একই গ্রামের ইছাহাক মুন্সির ছেলে আজমল মুন্সী(৪০) ও জামাল মুন্সী(৩০), জহুর মুন্সির ছেলে কোরবান (৩৫), বোচা শেখের ছেলে বেলায়েত শেখ ( ৫০) ও নান্নু শেখ (৪০), আছর মুন্সীর ছেলে হুমাউন মুন্সীসহ ৮/৯ জন এ ঘটনা ঘটান। প্রকাশ থাকে যে, আজমল মুন্সির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ দুদকের ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলা চলমান। আমরা ওদের দৃষ্টাষ্টামুলক শাস্তির দাবি করছি।
নির্যাতনের বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবুল কালাম মুন্সীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। ভাইরাল ভিডিওর শুরুতেই তার উপস্থিতি কেন? এ প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তিনি কাজ আছে বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শরীরে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন নিয়ে গত কাল তরিকুল ও ফরিদ নামে দুটি ছেলে এখানে ভর্তি হয়েছে। তাদের শরীরে সিগারেটের আগুন দিয়ে পোঁড়ানোর দাগও রয়েছে। সুস্থ হতে কয়েকেদিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন নবধারা কে বলেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।