বাগেরহাটে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধে সন্তান ও পুত্রবধূর জন্য (৭৭) বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে, এমন অভিযোগ করেছেন বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিষখালী গ্রামের মৃত সুনিল কুমার দাসের স্ত্রী কানন বালা দাস(৭৭) ।
তিনি জানান, তার আপন মেজ ছেলে বাদল দাস (৪৫) ও তার স্ত্রী দীপা বালা তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা ও অর্ধেক জায়গা জোর পূর্বক লিখে নেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এ ছাড়া বহুদিন আগে কূটকৌশলে একটি সাদা কাগজে তার মেজ ছেলে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী কানন বালার ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে প্র্রত্যেকেই বিবাহিত। তবে তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে কৃষ্ণ পদ দাস (৫২) ডাক্তারি পেশায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। মেজ ছেলে বাদল দাস (৪৫) ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে কর্মরত আছেন এবং ছোট ছেলে জগবন্ধু দাস(৪০) যশোরে একটি ঔষধ কম্পানিতে চাকুরি করছেন।
বর্তমানে তাদের মা কানন বালাকে ছোট মেয়ে সোমা রানি দাস লক্ষী (৩৮) দেখভাল করছেন।তার মেয়ে সোমা বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকুরীর সুবাদে সেখানে তার মায়ের সাথে বসবাস করেন।
তাদের বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা বলেন, আইন অনুযায়ী ৩ সন্তান সমান জায়গা পাবেন, কিন্তু মেজ ছেলের বৌ বাড়ির অর্ধেক এবং তাদের পছন্দ মতো জায়গার দাবি করেন।বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার সহ অনেকেই চেষ্টা করেছেন কিন্তু তাদের মতামতের অমিলের কারনে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সমাধানে আসতে পারেনি।
এ বিষয়ে গত ১৭/০৪/২০২২ ইং তারিখ কানন বালা দাস (৭৭) বাদী হয়ে তার আপন মেজ ছেলে বাদল কুমার দাস (৪৫) কে বিবাদী করের্ মোড়েলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি নং-৭৭২।
তিনি বলেন, আমার মেজ ছেলের বৌ অর্ধেক পরিমাণ জমি দাবি করে এজন্য প্রাই লোকজন নিয়ে এসে নানাবিধ অত্যাচার করে ও বাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে চায়। আমি ৩ সন্তানের নামে সমান ভাবে ভাগ করে দিতে চাই কিন্তু সেটা তারা বোঝার চায়না বরং পুলিশ নিয়ে আসে।
বিষয়টি তদন্তের জন্য মোড়েলগঞ্জ ফারি পুলিশ ইমদাদুল ও মোড়েলগঞ্জ থানার অফিসার বিপ্লব দু’দফায় তাদের বাড়িতে আসেন, কিন্তু বিষয়টির এখনো কোন সুরাহা হয়নি বলে উল্লেখ করেন মা কানন বালা।
ছোট মেয়ে বলেন, আমি বৃদ্ধ মাকে দেখার জন্য চাকুরীর সুবাদে এখানে অবস্থান করছি এবং আমার মাকে দেখভাল করছি।হয়তো এতে আমার মেজভাই ও তার স্ত্রী মনে করছেন এ বাড়ির জায়গা জমি গোপনে আমাকে লিখে দিতে পারে সেই সন্দেহে মা সহ আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে এবং আমি সহ আমার ভাই জগবন্ধু ও বোন সুকলা রানী দাসের নামে একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ করে হয়রানি করছে।এছাড়াও বিভিন্ন সময় মাকে ও আমাকে গুম ও হত্যার হুমকি দেয়। ভয়ে অধিকাংশ সময় তালা বন্ধ করে ঘরে দিন যাপন করি এতে আমি ও আমার মা সহ সবাই নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাদল কুমার দাস মুঠোফোনে বলেন, আমার ও আমার স্ত্রীর নামে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বরং তারাই আমাদের নানা ভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেুুু। বিগত ১০ বছর তারাই যায়গা ভোগদখল করছে। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে ১ মাস আগে আমার স্ত্রীকে হয়রানি সহ ৫ জন মিলে তার গায়ে পর্যন্ত হাত দিয়েছে যা নিয়ে একটি মামলাও হয়েছে। আমি কোন ভাবেই অতিরিক্ত সম্পত্তির দাবি করি না। আমার যেটুকু নেহ্য পাওনা আমি সেটুকু বুঝে নিতে চাই। এছাড়া এলাকার কাউকে মিথ্যা হয়রানি করা হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে তথ্যের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান রিপন চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।