স্বরূপকাঠি প্রতিনিধিঃ
স্বরূপকাঠি উপজেলায় সরকার নিবন্ধিত মোহনা সঞ্চয়ী সমিতির ৬০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।এ কাজে সমিতির কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় এক ওয়ার্ড জনপ্রতিনিধি বলে অভিযোগ করেন সরকারি নিবন্ধনভুক্ত মোহনা সঞ্চয়ী সমিতির একাধিক গ্রাহক।মোঃ মিজানুর রহমানের নামে নিবন্ধিত পিডি ১৩ নং এ সমিতির একজন কর্মকর্তা মোঃ নুর ইসলামের সাথে কথা হয়। তিনি জানান আমাদের এ সংস্থায় মোট ৮টি সঞ্চয়ী সমিতি রয়েছে।
এখানকার ৪টি সমিতির মেয়াদ শেষ হলেও হিসাবরক্ষক মোঃ মাইনুল ইসলাম হিসাব দিতে কালক্ষেপন করতে থাকে।এর মধ্যেই সমিতির কর্মকর্তা বাড়রা গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে মোঃ মিজান ৩৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দেনবেলে মাইনুল আমাদের জানান।
মিজান পালিয়ে যাওয়ায় নান্দুহার গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের আলী হোসেনের ছেলে হিসাবরক্ষক মাইনুল হাসান ৪ টি সমিতির হিসাব না দিয়ে চাতুরীর আশ্রয় নেয়। তিনি বলেন সুটিয়াকাঠি ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের কামাল মেম্বরের মাধ্যমে কয়েকদফা বৈঠকের পরও সমাধান করতে না পারায় মাইনুল আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন।পরবর্তীতে গ্রাহকরা মাইনুলের বাড়িতে টাকার জন্য তাগাদা দিতে থাকলে মাইনুল তার আত্মসাৎকৃত ৪,৬,৭ এবং ৮ নং সমিতির হিসাবান্তে ৪০ লক্ষাধিক টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেন গত নভেম্বর মাসে।বাকী টাকা ২ মাস পরে দেয়ার কথা থাকলেও মাইনুল হাসান এখন টাকা দিতে ছল চাতুরীর আশ্রয় নেয়া শুরু করেন।
একাধিক গ্রাহক জানান মাইনুলের কাছে আমাদের জমাকৃত টাকার দ্বিতীয় কিস্তি ফেরত চাইলে তিনি ও তার পরিবারের লোকজন খারাপ ব্যবহার করে ।এ ঘটনায়
সমিতির সদস্য মোঃ জালিস স্বরূপকাঠি থানায় মাইনুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। জালিস বলেন আমার জমাকৃত ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা মাইনুল আত্মসাৎ করেন। এটাকা ফেরত পাওয়ার জন্য গত বছর নভেম্বর মাসে স্বরূপকাঠি থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্ত আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
এদিকে এ অভিযোগের তদন্তভার নেয়া এস আই মামুন জানান সমিতির প্রধান মিজান টাকা নিয়ে আত্মগোপন করায় এ ব্যাপারে আর তদন্ত আগায়নি।তবে স্থানীয় মেম্বর কে বলেছিলাম সমাধানের জন্য।
সংশ্লিস্ট ওয়ার্ড মেম্বর মোঃ রাজু বলেন জালিস থানায় অভিযোগ করেছে শুধু মাইনুলের নামে।এখানে অভিযোগ হবে মাইনুল ও মিজানের নামে।দুজনের নামে অভিযোগ না হওয়ায় আমি আর আগাইনি।
অভিযোগকারী জালিস বলেন আমি যার কাছে টাকা পাবো তার নামেই অভিযোগ দিয়েছি। সমিতিতে অন্য কারা দেনা থাকলে সেটা আমার দেখার ব্যাপার নয়। তিনি বলেন প্রশাসন ও মেম্বর এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আমি খুব শিঘ্রই আদালতে যাবো।
এ ব্যাপারে মাইনুল হাসানের মোবাইল নম্বরে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে সমিতির আরেক জন হিসাবরক্ষক মোঃ বেল্লাল বলেন।আমি ৩ ও ৫ নং নামে দুইটি সমিতির হিসাব রক্ষক ছিলাম।হিসাবান্তে আমার দেনা থেকে দুইলাখ টাকা পরিশোধ করি।বাকি টাকাও শিঘ্রই দিবো আশা রাখি।তিনি আরো বলেন সমিতির কর্মকর্তা মোঃ নুরইসলাম এবং তার আনিত সদস্যরা মাইনুল হাসানের কাছে ৬ নং সমিতি বাবদ ১৮ লাখ টাকার উপরে পাবে। এছাড়াও মাইনুল ও মিজান অন্য সমিতিগুলোতেও অনেক টাকা দেনা রয়েছে বলে হিসাবান্তে জেনেছি।তবে তারা কেনো ছলচাতুরি করছেন তা আমার জানা নেই।কিন্ত গ্রাহকের পাওনা টাকা যত দ্রুত দেয়া যায় ততই ভালো বলে আমি মনে করি।
এদিকে মিজান মুঠোফোনে বলেন মাইনুল একাই সব টাকা আত্মসাৎ করেছে।আমাকে কৌশলে ফাসিয়ে দিয়ে এলাকা ছারা করেছে।মিজান আরো বলেন এখন ঢাকায় তরকারি বিক্রি করি।আল্লাহ বাচালে আমার কাছে গ্রাহকদের প্রকৃত পাওনা টাকা আমি পরিশোধের চেস্টা করে যাচ্ছি।