1. nabadhara@gmail.com : Nabadhara : Nabadhara ADMIN
  2. bayzidnews@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  3. bayzid.bd255@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  4. mehadi.news@gmail.com : MEHADI HASAN : MEHADI HASAN
  5. jmitsolution24@gmail.com : support :
  6. mejbasupto@gmail.com : Mejba Rahman : Mejba Rahman
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন

আমরা সবসময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি-টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নবধারা ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪
  • ১৪১ জন নিউজটি পড়েছেন।

বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় নিয্যাতিতদের পক্ষে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কণ্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের সেই ভয়াবহতা আমরা নিজেরাও দেখিছি। ১৯৭১ সালে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী যেভাবে আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। আমরা সবসময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি, তাইতো আমরা প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমারে যখন মানুষের প্রতি অত্যাচার হলো, শিশুরা আহত অবস্থায় আশ্রয় চাইলো আমরা মানবিক কারনে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। আজকে গাজায় শিশুদের যে অবস্থা দেখি, নারীদের যে অবস্থা দেখি আমি জানি না বিশ্ব বিবেক কেন নাড়া দেয় না। সেটাই আমার প্রশ্ন?

 

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আজকে বিশ্বব্যাপী আমরা দেখি অনেকে শিশু অধিকারের কথা বলে, শিশু শিক্ষার কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে সোচ্চার। আর পাশাপশি আমার দেখি একটি দ্বিমুখী কার্যক্রম। গাজায় শিশুদের উপর যখন বোমা ফেলা হয়, হত্যা করা হয়, হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়, ফিলিস্তিনীদের উপর যখন আক্রমণ করা হয় তখন আমি জানি না এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় থাকে। তাদের সেই মানবিকতাবোধটা কোথায় থাকে সেটাই আমার প্রশ্ন?

 

আজ রোরবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ জন্মবার্ষিকী জাতীয় শিশু দিবসে তিয়াশা জামিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

 

আজকের শিশুরা আগামী দিনের উন্নত বাংলা গড়ার কারিগর মনে করে শিশুদের উদ্দেশ্যে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, পড়াশোনার নামে চাপ নয়, মেধামননের বিকাশই গুরুত্বপূর্ণ। যে কাজ তুমি করবে তার প্রতি তোমার আন্তরিকতা এবং সব সময় সততার সাথে করতে হবে। সততা এবং আন্তরিকতা যদি থাকে তাহলে সব সময় যে কোন কাজেই সাফল্য অর্জন করা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু শিশুদের শিক্ষাকে সম্পূর্ণ অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে প্রায় ২৬ হাজার স্কুল সরকারীকরণ করে দেন। বিধ্বস্ত দেশে সাংবাদিক, শিক্ষক সকলের চাকরী সরকারীকরণ করে দেন। সকল কারখানা জাতীয়করণ করে শ্রমিকদের চাকরীও নিশ্চিত করেছিলেন। তবে শিশুদের দিকে তার সবসময় নজর ছিল এবং দুস্থ শিশু, একেবারে দরিদ্র শিশু, অসহায়, এতিম তাদের পূর্ণবাসনের জন্য শিশু ডে কেয়ার এ্যান্ড প্রটেকশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

 

অভিভাবক, শিক্ষক সরকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, মেধামননের সুযোগ যাতে শিশুরা পায়, পড়াশোনার নামে চাপ তৈরি করবেন না। সেভাবেই আমরা কারিকুলাম করছি। শিশুরা যাতে সুন্দর পরিবেশে মানুষ হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। শিশুদের ঝরে পড়ার হার কমিয়ে এনেছি। আগামী দিনে স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার মূল নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশুকিশোররা। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমরা শিশুদের গড়ে তুলছি। আজকের শিশুরা গড়ে উঠবে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। শিশুদেরকে ছোটবেলা থেকে কতগুলো শিক্ষা দিতে হবে। যেটা একান্তভাবে শিশুদের জন্য অপরিহার্য। সেটা হলো শিশুদের রাস্তায় চলতে গেলে কতগুলো নিয়ম মেনে চলতে হয় এই নিয়মটা যেন শিশুরা মেনে চলে সেই শিক্ষা শিশুদেরকে দেয়া প্রয়োজন। যাতে করে সড়ক দূর্ঘটনা না হয়। সেই সাথে রাস্তায় নিরাপদ চলতে গেলে কিভাবে আমোদের চলতে হবে, কোন দিকে হাটতে হবে এই বিষয়টাও ছোটবেলা থেকে শিশুদের শিক্ষা দেয়া উচিত। যেসব শিশুরা প্রতিবন্ধি, অটিস্টিক এসব শিশুদের সাথে কেউ যাতে দূর্ব্যবহার না করে, তাদেরকে যেন আপন করে নেই সেইভাবে শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে।শিশু সমাবেশে শিশুদের পিছনে দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা শিশুদের অনুষ্ঠান, আমি দেখি আমার সামনে বেশ বয়োবৃদ্ধ শিশুরা বসে আছে, এখন মনে হচ্ছে আমি কার সামনে বক্তব্য দিচ্ছি। আমরা শিশুরা কোথায়, শিশুরা তো সেই দূরে, পিছনে, কেন তারা পিছনে থাকবে। আমার অনুরোধ থাকবে এরপর থেকে যখন কোন শিশুদের অনুষ্ঠান থাকবে অন্তত সামনের সারিগুলি আমাদের শিশুদের জন্য থাকবে, আর একটা পাশ শিশুদের জন্য থাকবে। আমার একটা সুবিধা আছে, আমরা অনেক বয়স হয়ে গেছে, সামনে যারা তাদেরকে আমি শিশু ভাবতেই পারি। সেটা ভাবার আমার অধিকার আছে। আমি সেটা মেনে নিয়েই বক্তব্য দিচ্ছি, কি করবো শিশুদের তোদেখতে পারছি না। ছোট্ট সোনামনিরা তোমরা অনেক দূরে থাকলেও আমরা হৃদয়ের কাছে আছো।

 

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে আমরা এসেই আমাদের শিশুদের সব রকম সুরক্ষার দেয়ার পদক্ষেপ নেই। আমরা ২০০০ সালে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন করে শিশুদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করি। ২০১০ সালে জাতীয় শিশুনীতি২০১১ আমরা প্রণয়ন করি। আমরা শিশু আইন ২০১৩ প্রণয়ন করি। ২০১৮ সালে আমরা সংশোধন করে শিশুদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। আমরা শিশু উন্নয়ন স্বাভাবিক জীবনে একভূত করার লক্ষ্যে শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে শিশুদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। তাছাড়া শিশুদের জন্য শিশু সদন প্রতিষ্ঠা, প্রাথমিক বৃত্তিমূলক শিক্ষাদেয় কর্মসূচী, শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার জন্য দুই কিলোমিটারের মধ্যে এক একটি প্রাইমারী স্কুল হয় সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের দেশে মাত্র ৪৫ ভাগ ছেলে মেয়ে পড়ালেখা করতো, আজকে আমাদের দেশে প্রায় ৯৮ ভাগ শিশু স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে, বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা স্কুলে যেতেই পারতো না। তাদের জন্যও আমরা সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষার উপর গুনুত্ব দিয়েছি, আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল শূন্য দশমিক ভাগ। আজকে তা ১৭ দশমিক ৮৮ ভাগে আমরা উন্নতি করেছি। আরো যাতে ভালভাবে কারিগরি ভকেশনাল ট্রেনিং পায় সে ব্যবস্থা করেছি স্কুলগুলোতে কম্পিউটার ল্যাবরোটরি করে দিয়েছি, কম্পিউটার ল্যাবের সাথে সাথে আমরা বাংলাদেশে কম্পিউটার শিক্ষা ট্রেনিংএর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রযুক্তি শিক্ষাটা শিশুকাল থেকে যেন পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শিশুদের ঝরে পরার হার যা প্রায় ৪৯ ভাগ ছিল, আমরা তা ১৩ দশমিক ভাগে নামিয়ে এনেছি। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয় বাংলাদেশে ছিল মাত্র ৬৫ হাজার ৭২টি। এখন লক্ষ ১৮ হাজার ৮৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের স্বাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ ভাগ, আজকে তা ৭৬ দশমিক ভাগে আমরা উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। কেউ যেন নিরক্ষর না থাকে সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমরা শিশুদের প্রাইমারী থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি উপবৃত্তি দিচ্ছি। প্রাইমারী বৃত্তি মায়ের নামে সরাসরি চলে যাচ্ছে সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, দুপুরে টিফিনের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি, মিডডে মিল টাইম আমরা চালু করেছি। আমাদের শিশুরা যাতে সুন্দর পরিবেশে মানুষ হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য দিচ্ছি।

 

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা এদেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। তাই তার জীবনের সমস্ত সুখ, সুবিধা, সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। যেন বাংলাদেশের মানুষ অন্ন, বস্ত্র বাসস্থান চিকিতসা, শিক্ষা এবং উন্নত জীবন পায়। আর তা করতে গিয়েই পাকিস্থান নামের দেশটি সৃষ্টি হবার পর থেকেই সেই ৪৮ সালমথেকে ৭১ সাল পর্যন্ত বারবার কারাবরণ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অহবানে সারা দিয়েই এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছিল। আর সেই বিজয়ের পথ ধরেই আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, একটি জাতি রাষ্ট্র পেয়েছে। ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সকল সুযোগই একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছিল, নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মাত্র তিন বছর মাস সময় পেয়েছিলেন। তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছেন, যে সংবিধানে দেশের মানুষের প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করা, নারী শিক্ষার সুযোগ, নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য পার্লামেন্টে সংরক্ষিত আসন থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থাই তিনি করেছিলেন। আজকে আমরা পল্লী বিদ্যুত থেকে শুরু করে যা কিছুই করি সব ভিত্তিই জাতির পিতা করে দিয়ে গেছেন। শিশুদের সুরক্ষার জন্য শিশু আইন তিনি প্রনয়ণ করেন এবং শিশুদের জন্য ব্যবস্থাও করে যান। কোন শিশুমযেন অবহেলিত না থাকে।

 

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, অত্যান্ত দু:খের বিষয় জাতির পিতার যে আকাংখা ছিল দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেলেন। আর সেই সময় ১৫ আগষ্টের আঘাতটা এলো। এরপর আর বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যত কোন সম্ভবনাই ছিল না। এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্মগ্রহণ করেন। টুঙ্গিপাড়া তখন ঢাকা রাজধানী থেকে অনেক দূরে। ২২ থেকে ২৪ ঘন্টা সময় লাগতো আসতে। মাটিতেই তিনি ঘুমিয়ে আছেন বাবা মার করবের পাশে। আজকে আমরা এখানে জাতীয় শিশু দিবস পালন করতে পেরে সত্যি আনন্দিত।

 

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমরা একটা জিনিসই চাই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে, লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। কারন শিশুকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু দেখেছেন দেশের মানুষের ক্ষুধাপিড়ীত কঙ্কালসার অবস্থা। দেখেছেন পড়নে ছিন্ন কাপড়, পেটে খাবার নেই, রোগে চিকিতসা নেই। যা তাকে ব্যথিত করতো তাই ছোট বেলা থেকেই তিনি যারা একেবারেই গরীব অসহায় ছাত্রছাত্রী ছিল তাদের সাহায্য করতেন। আমার দাদীর কাছে গল্প শুনেছি তিনি তার স্কুলের সাথীদের বই, ছাতা দিয়ে দিতেন। এমন কি পরার কাপড়ও বিলিয়ে দিতেন। সৌভাগ ছিল তার এজন্য মা বাবা তাকে কখনো বকাঝকা করতো না, বরং উতসাহিত করতো। দূর্ভিক্ষের সময় নিজেদের গোলার ধান মানুষকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এভাবে মানুষের প্রতি তার একটা আলাদা দায়িত্ববোধ শিশুকাল থেকে জেগে উঠেছিল। যা প্রতিফলন ঘটেছে পরবর্তীকালে তিনি যখন দেশ স্বাধীন করে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেই সাথে সাথে তিনি খেলাধূলা করতেন। জাতির পিতার জীবনে এটাই ছিল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

 

জেলা শহরের মালেকা একাডেমীর ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী তিয়াসা জামিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, মহিলা শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক, শিশু প্রতিনিধি তায়েবা তাসনিম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আব্দুর রহমান লামিয়া বারী।

 

সমাবেশে বক্তব্য রাখার আগে সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রতিয়োগীতার পুরস্কার, অস্বচ্ছল, মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্থিক অনুদান বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বারক উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। এরপর প্রধানমন্ত্রী দর্শক সারিতে বসে ক্ষুদে শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং শিশুদের সাথে ফটোসেশন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বই মেলা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ জন্মবার্ষিকী জাতীয় শিশু দিবসে শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে হেলিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ০৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা হেলিকপ্টারটি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। ১০টা ১০মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রীও শুভেচ্ছার উত্তর দেন। পরে রাষ্ট্রপাতি হেলিকপ্টার যোগে ১০টা ২০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে স্বাগত জানান।

 

পরে ১০টা ৩৮ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা জানান। এসময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন, বেজে ওঠে বিগউলের সুর। পরে বঙ্গবন্ধু তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের নুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতহা পাঠ বিশেষ মোনাজাত করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য বহিতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর রাষ্ট্রপতি ঢাকায় ফিরে যান।

 

রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান হিসাবে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

 

সময় বস্ত্র পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বশার খায়ের, সাধারন সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয় তোরণ। নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দউদ্দীপনা দেখা যায়। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অতিথিদের আগমনকে নির্বিঘœ করতে টুঙ্গিপাড়াসহ গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। #

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved সর্বস্বত্বঃ দেশ হাসান
Design & Developed By : JM IT SOLUTION