নবধারা ডেস্কঃ
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মানুষের পুষ্টি ও আমিষের প্রয়োজন মেটাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর কাজ করছে। কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম পর্যায়ে খামারিদের উৎপাদিত দুধ,ডিম,মাছ,মাংস তাঁদের মাধ্যমে,গ্রুপভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ টিম গঠন করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তর-সংস্থার মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত বছর প্রায় ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার পণ্য ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থায় বিক্রি করা হয়েছে। এতে উৎপাদক ও খামারি এবং একই সঙ্গে ভোক্তারা উপকৃত হয়েছেন।করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লাখ খামারিকে ৫৫৪ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও ২ লাখ খামারিকে ২৯২ কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে।এটি যাচাই-বাছাই চলছে। এটি ঋণ নয়।ছোট ছোট প্রান্তিক খামারিরা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন,সে জন্য এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
আজ রোববার রাজধানীর সচিবালয়ে নিজ দপ্তর কক্ষে করোনা সংকটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গৃহীত কাযর্ক্রম ও সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনায় সরকার ঘোষিত চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে অনেক দপ্তরের কাজ বন্ধ থাকলেও এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে খামারিদের উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। অনলাইন-এসএমএস সার্ভিসের মাধ্যমে খামারিকে সেবা প্রদান এবং অনলাইনে আমদানি-রপ্তানির জন্য এনওসির আবেদন গ্রহণ ও অনুমোদন করে ওয়েবসাইটে প্রদান করা হচ্ছে। প্রাণিজ পণ্য আমদানি-রপ্তানি সচল রাখার জন্য এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব ল্যাব চালু রাখাসহ সব ধরনের পরীক্ষা ও পরিদর্শন কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয় ৫ এপ্রিল থেকে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এবং এগুলোর উৎপাদন সামগ্রীর সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য সমন্বয়ক হিসেবে কাজ শুরু করেছে। এ কারণে দেশের কোথাও দুধ, ডিম, মাছ, মাংসের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। এ বছরও ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এসব বিক্রয়কেন্দ্রে বাজারদামের চেয়ে কম দামে ন্যায্যমূল্যে দুধ, ডিম, মাছ, মাংস বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য কিনতে অসাধু ব্যক্তি বা মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে যাতে মানুষ জিম্মি হয়ে না পড়ে। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থায় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা,সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২১০ টাকা,ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ টাকা,ডিম প্রতিটি ৬ টাকা এবং প্যাকেট দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।এ ব্যবস্থায় সারা দেশে এ পর্যন্ত ২২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে।
করোনা টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, টিকার সাময়িক সমস্যা হলেও ইতিমধ্যে সরকার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এসব দেশ থেকে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনা টিকা পেয়ে যাব। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সেরা কূটনীতির কারণে বাংলাদেশের একজন মানুষও করোনার টিকাহীন থাকবে না।
এ সময় করোনা সংকটেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তথ্যের অবাধ প্রবাহকে সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মাননীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
নবধারা/বিএস