আব্দুল্লাহ আল আফনান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নামে বিশেষায়িত হওয়া তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা ১৭ দিনেও জমা দিতে পারেনি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এনিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গত মার্চ মাসের শনিবার (১৬ মার্চ) মধ্যরাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
ওই সময় উপাচার্য বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি তদন্ত কমিটি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। তাছাড়া এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘটা ঘটনারও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। আর আমার হাতে যত আইন আছে, সব আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করবো।’
কিন্তু সে কথা দিয়ে রাখতে পারেনি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি। নির্দেশনার ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও জমা পড়েনি তদন্ত প্রতিবেদন। তদন্ত কমিটি বলছে প্রতিবেদন কবে জমা দিতে হবে তার স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা তাদের দেয়া হয়নি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এর আগেও বিভিন্ন ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। আজ পর্যন্ত সেসব তদন্তের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে অতিদ্রুত দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, আমরা যখন উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিই তখন তাদের পক্ষ হতে বলা হয়েছিলো তদন্তের বিষয়গুলো একটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যায়৷ তাই একটু সময় লাগতে পারে। আর এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আন্দোলন করাও সম্ভব নয়। আমরা দেখবো এই বন্ধের ভেতরে প্রশাসন কতটুকু কাজ করে৷ প্রশাসনের ঢিলেমি থাকলে আমরা ক্যাম্পাস খুললে আবারও আন্দোলন করবো৷
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা এখনও কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে আমরা প্রতিদিনই এটা নিয়ে বসছি। এর আগে বর্তমান ও সাবেক প্রক্টর, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান, তৎকালীন প্রোভস্ট ও একজন হাউস টিউটরের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছিলো। নতুন কিছু ইনফরমেশনের জন্য তাদের পুনরায় ডাকা হয়েছে।
তবে সামনের আন্দোলন গুলো আরো জোড়ালো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সব আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিলো। তবে প্রশাসন যদি আমাদের আন্দোলন হালকাভাবে নেয় তাহলে হয়তো এরপরের আন্দোলনগুলো শান্তিপূর্ণ থাকবেনা। ক্যাম্পাস এখন অফিসিয়ালি বন্ধ তাই প্রশাসন প্রকৃতিগত ভাবে এর সুবিধাটি পেয়ে গেছে৷ ঈদের পরেই প্রশাসনকে আমাদের মুখোমুখি হতে হবে এবং ছাত্ররা আরও কঠোর হবে৷
এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, সাত দিনের ভেতরে রিপোর্ট দিলে সেই রিপোর্ট অত্যন্ত কাঁচা হয়। যেহেতু রিপোর্টের কাজ চলছে, আমাদের শিক্ষকরা কেউ বসে নেই৷ তদন্ত কমিটির আহবায়ক অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকবার কুমিল্লাতেও গিয়েছেন তারা৷ আশা করছি ঈদের পরপরই আমরা রিপোর্ট হাতে পাবো।