নবধারা ডেস্ক:
১৭ আগস্ট, ২০০৫। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) কর্তৃক শুধুমাত্র মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা করা হয়। বিগত বিএনপি- জামাত জোট সরকারের আমলে আজকের এই দিনে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
ওইদিন বেলা ১১ থেকে ১১:৩০ এর মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার প্রেসক্লাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ঢাকার ৩৪টিসহ মোট ৪শ’ স্পটে ৫শ’ বোমার বিস্ফোরন ঘটায় জঙ্গিরা। হামলায় দুই শতাধিক আহত এবং দুইজন নিহত হোন।
হামলার স্থানগুলোতে জেএমবির লিফলেট পাওয়া যায়। লিফলেটগুলোতে বাংলাদেশে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে বক্তব্য লেখা ছিল। তাতে লেখা ছিল, দেশের কর্মরত বিচারকদের প্রতি একটি বিশেষ বার্তা পাঠালাম। দ্রুত দেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে হবে। নতুবা কঠিন পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে জেএমবি।
জানা যায়, সিরিজ বোমা হামলা করতে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। যার বেশির ভাগ টাকা মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে এসেছিলো। বাকি অর্থ যুদ্ধাপরাধীদের একটি রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন এনজিও এর মাধ্যমে জোগান দেওয়া হয়েছিলো।
হামলার কিছুদিন পর আবার শুরু হয় ধারাবাহিক হামলা। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের জেলা আদালতে বিচারকাজ চলাকালে একযোগে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এজলাসে ঢুকে বিচারককে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে মারা হয়। ওই বছরের ১৯ অক্টোবর সিলেটের দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীকে হত্যা করতে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর ঝালকাঠি শহরের অফিসার্স পাড়ায় জাজেস কোয়ার্টারের সামনে বিচারকদের বহনকারী মাইক্রোবাসে শক্তিশালী বোমা হামলা করে। হত্যা করে ঝালকাঠি জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহমেদ চৌধুরী ও জগন্নাথ পাঁড়েকে। একই বছরের ৩০ নভেম্বর গাজীপুর ও চট্টগ্রাম আদালতে পৌনে এক ঘণ্টার ব্যবধানে জেএমবি সদস্যরা গায়ে বোমা বেঁধে হামলা চালায়। এতে দুই জঙ্গি সদস্যসহ ৯ জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৯ টি মামলা দায়ের হয়। এ সব মামলায় ৬৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত শেষে ৭৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। হামলার ১১৬টি মামলার রায় ঘোষণায় ৩২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।