শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর কালুখালীতে চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রভাষকের শ্বশুর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় প্রভাষক, তার স্ত্রী, শ্বশুর ও ফুপু শ্বাশুড়িকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বাস্তখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে ।
আহতরা হলেন পাংশা সরকারি কলেজের ইংরেজি (খন্ডকালীণ) বিভাগের প্রভাষক মো. সাদ্দাম হোসেন (৩০), তার স্ত্রী আলপনা খাতুন (২২), শ্বশুর সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আলী (৫৫) এবং প্রভাষকের ফুপু শ্বাশুড়ি বুলু বেগম (৭৫) ।
আহতদের মধ্যে বুলু বেগমকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অন্যান্যদের পাংশা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত প্রভাষক সাদ্দাম খান হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় দুই মাস আগে বাস্তখোলা গ্রামের (আমার শ্বশুর বাড়ি এলাকার) কালাম ওরফ ড্যাবলান আমার কাছে চাঁদা চায়। তারা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। যে কারনে আমি বিষয়টি বিএনপি’র কয়েকজন নেতাকে অবগতি করি। তারা আমাদের ডেকে মীমাংসা করেও দেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমি বাস্তখোলা গ্রামে আমার শ্বশুর বাড়িতে যাই। রাত ৯টার দিকে আমার শ্বশুরের সঙ্গে বসে কথা বলছিলাম। এ সময় ড্যাবলান ঘরের মধ্যে ঢুকে আমাকে বাহিরে ডেকে আনে। এ সময় আচমকা ড্যাবলান ও তার ভাই সম্রাট, চাচা বক্কার মন্ডল, তার ছেলে দলু মন্ডলসহ ১০-১২ জন মিলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। এ সময় আমার চিৎকার শুনে আমার স্ত্রী, শ্বশুর ও ফুপি শাশুড়ি এগিয়ে এলে তাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। হামলার এক পর্যায়ে ড্যাবলান আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিস্তল বের করে গুলি করতে গেলে ধস্তাধস্তিতে গুলি করতে ব্যর্থ হয়। এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তারা সবাই পালিয়ে যায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত বক্কার মন্ডল বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে তারা আমাদের মেরেছিল এখন আমরা ক্ষমতায় তাই আমরা তাদেরকে মেরেছি। অভিযুক্ত অন্যান্যদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অভিযুক্তরা এলাকায় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি করছে। ভয়ে এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পরে না।
স্থানীয়রা আরও জানায়, আহতরা কেউই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না। অভিযুক্তরা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এ বিষয়ে কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আহতরা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় আহত প্রভাষক থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ রাজিব মন্ডল (৩৮), তার পিতা মক্কার মন্ডল(৬০) ও রফিক মন্ডলকে (৪৫) আটক করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত কালাম ওরুফে ড্যাবলানের বিরুদ্ধে থানায় নারী নির্যাতন, ডাকাতি ও মারামরির তিনটি মামলা রয়েছে। তার ভাই সম্রাটের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা হয়েছে।