ক্যাম্পাস প্রতিনিধি,আহাদুল ইসলাম জয়
ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের তিন বছর পর শিক্ষকতা থেকে সাময়িক অব্যাহতি পেলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচএম আনিসুজ্জামান।
সম্প্রতি (১১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় তাকে সাময়িক অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
জানা যায়,২০২২ সালের শুরু দিকে এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে অভিযুক্ত আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে। একই সময়ে তার বিরুদ্ধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর গবেষণা চুরি ও জালিয়াতি করে সেটি নিজের গবেষণা আকারে প্রকাশ এবং উক্ত গবেষণার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রাপ্তি, প্রজেক্ট প্রাপ্তি (অভিযোগে দাবিকৃত উক্ত জালিয়াতকৃত গবেষণা পরবর্তীতে রিসার্চ প্রজেক্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করার তথ্যাদি), উচ্চতর ডিগ্রির অফার লেটার (ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনউইচ) এবং অর্থ কেলেঙ্কারি (বিভাগের বিভিন্ন একাউন্ট থেকে রেজুলেশনবিহীন উত্তোলিত অর্থের চেক, বিভাগের ব্যাংক হিসাবসমূহের স্টেটমেন্টসমূহের ফটোকপি) সংক্রান্ত বিভিন্ন জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। পরে,গত ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি তাকে ওই বিভাগের সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়াসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে নিষেধ করা হয়। এ ঘটনায় ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মাদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়াকে সভাপতি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক অফিস আদেশে তাকে শুধুমাত্র পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তখন এ আদেশের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তাকে পাঠদানের সুযোগ না দেওয়ার দাবি জানায়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন পত্র জমা দেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকা সত্বেও বরাবরের মতো তিনি পাঠদান ও কৃষি বিভাগের বিভিন্ন সভায় যোগদান করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এইচএম আনিসুজ্জামান বলেন, আমি আগে পাঠদান করালেও সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়ার পরে আমি গত দু’দিন একাডেমিক কোনো কার্যক্রমে অংশ নেইনি।তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আমার বক্তব্য সংবলিত একটা আবেদন পত্র দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপ- রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বলেন, শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুসারে তিনি কোনো পাঠদান করাতে পারবেন না। পরবর্তীতে তার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।