শফিকুল ইসলাম সাফা (স্টাফ রিপোর্টার) চিতলমারীঃ
বাগেরহাটের চিতলমারীতে দিনমজুর রবিউল ইসলাম প্রতিবেশি সুদে মাহজন ইদ্রিস শেখের কাছ থেকে ৪৬ হাজার টাকা সুদে আনলে তার দ্বিগুণ টাকা পরিশোধ করলেও সুদব্যবসায়ী তাকে চাপ প্রয়োগ করলে বর্তমানে তিনি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় তার ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ওই সুদ ব্যবসায়ী ইদ্রিস শেখ। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, কারেন্ট সুদের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এলাকার কতিপয় অসাধু লোক। মাকড়সার মতো জাল বিছিয়েছে তারা। আর এ জালে ধরা পড়ছে এলাকার সাধারণ দিনমজুর চাষিসহ নানা শ্রেণী পেশার লোক। করোনা কালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিসহ অনেকে কোন উপায়ান্ত না পেয়ে এসব সুদব্যবসায়ীদের কাছে থেকে কারেন্ট সুদে টাকা নিয়ে পরবর্তীতে তাদের সুদের জন্য গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ।
এলাকার অনেকের মতে করোনার চেয়ে ভয়াবহ ত্রাস সৃষ্টি করছে এসব সুদব্যবসায়ীরা। তারা সুদের টাকা আদায়ের জন্য হুমকি-ধামকির পাশাপাশি পাওনাদারের বাড়িতে গিয়ে মা-বোন ও স্ত্রীর সামনে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল ও মারধর করার কারণে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
চিতলমারী সদর ইউনিয়নে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মোল্লা জানান, সুদকারবারীদের জন্য এলাকার অনেকে ঘরছাড়া হয়েছে। তাদের হুমকিতে আত্মহত্যা করেছে অনেক লোক। এসব সুদ ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অনেকে কথা বলতে সাহস পায় না। তারা টাকা দিয়ে সব অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা কোন বিচার পায় না। করোনা কালীন সময়ে মানুষ নানা শঙ্কায় আছেন কিন্তু মনে হচ্ছে করোনার চেয়ে বড় ত্রাস এসব সুদব্যবসায়ীরা।
ঘোলা গ্রামের ইদ্রিস শেখের সাথে কথা হলে তিনি সুদে টাকা দেওয়ার বিষয়য়ে জানান, রবিউল শেখের কাছে তিনি ধানের বিনিময় টাকা দিয়েছেন। রবিউল তার সাথে ঠিকমত লেনদেন না করার কারণে তার ঘরে তালা লাগিয়েছেন। তবে তালা লাগানোর জন্য তিনি ভুল স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে বড়বাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাসুদ সরদার জানান, রবিউলের বিষয়টি শুনেছি। পাওনা টাকার জন্য কারো ঘরে তালা লাগানো , বাড়ি দখল করা মোটেই ঠিক কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার একে এম আরিফুল হক জানান, এ জাতীয় সুদ ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবধারা/বিএস