নাজিরপুর (পিরোজপুর)প্রতিনিধিঃ
নারিকেল পাতার ঘরে বসবাস করছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা পূর্ববানিয়ারী গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের পরিবার এ পাতার ঘরে বসবাস করছেন । এরপরও অসচ্ছল ওই পরিবারকে সরকারি ঘর বরাদ্দের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে,ফজলুর রহমানের জীবদ্দশা কেটেছে অসচ্ছলভাবে।তার ভাগ্যে জোটেনি একটি ভালো ঘর। নারিকেল গাছের পাতার ছাউনি আর বাঁশ-খুঁটির ঘরেই হয়েছে তার মৃত্যু।বর্তমানে ঘরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। অসচ্ছলতার কারণে তার ছেলেও ঘরটি মেরামত করতে পারেননি।জীবিকার তাগিদে ছেলে শফিকুল ইসলাম তার মাকে নিয়ে চট্টগ্রামে থাকছেন। সেখানে প্রাইভেট টিউশনি করে জীবন চালাচ্ছেন।অথচ সরকার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দ্বিতল ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। তবে সেই ঘর পাওয়ার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে ফজলুর রহমানের পরিবারের। ফজলুর রহমান রেখে গেছেন এক ছেলে ও তিন মেয়ে।যদিও মেয়েরা বিবাহিত।তবে মুক্তিযোদ্ধার চার সন্তান সরকারি একটি ঘর পাওয়ার যুদ্ধে ধরনা দিচ্ছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ সংশ্নিষ্ট বিভাগে।
ফজলুর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বিতরণ তালিকা প্রণয়নে কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আমার বাবার নামটি তালিকায় স্থান পেয়েও কী কারণে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে,তা জানি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুব হোসেন বলেন,আমি সব মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদন্ত করে তালিকা করেছি।ইউএনও ও জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগতভাবে বলেছি,নাজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধারা ঘর পেলে ফজলুর রহমানের পরিবার যেন সর্বাগ্রে ঘর পায়।তবে তালিকা থেকে তার নাম কীভাবে বাদ পড়ল, আমার জানা নেই।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আঃ লতিফ বলেন, উপজেলায় ৪৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। একসঙ্গে সবাইকে ঘর দেওয়া সম্ভব নয়,মাত্র ছয়ভাগ মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর দেওয়া সম্ভব হয়েছে।তবে আমি বেঁচে থাকলে আগামী তালিকায় ফজলুর রহমানের পরিবার ঘর পাবে। ইউএনও মোঃ ওবায়দুর রহমান জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের পরিবার জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল করেছিলেন।আপিল শুনানিতে জেলা কমিটি ফজলুর রহমানকে বাদ দিয়েছে।