আজহার লিমনঃ
ক্যাম্প বাজার পাশ্ববর্তী জান্নাতবাগ পার্ক লাগোয়া রোড।
রাস্তার ওপাশে মলিন পোশাকে দুইটা ছোট মেয়ে যাচ্ছিলো। কতই বা বয়স হবে। বেশি জোর ৫-৬।
তারা একে অপরকে পলিথিন থেকে গোস্ত বের করে দেখাচ্ছিলো।
একজন বলল, “দেখ আমার ৩ পিস। এক পিস আবার হাড়!”
আরেকজন বলল, “আমার ৫ পিস।”
যার কম সে মনে হয়, একটু গোস্ত চাইলো…।
এতক্ষণ তাদের দেখছিলো রাস্তার এপাশে হাঁটতে থাকা মারিয়ামের আম্মু।
তিনি তখন ওদের সাথে কথা না বলে থাকতে পারলো না।
জিজ্ঞাসা করলো,
– সারাদিন কি এতটুকুই গোস্ত পাইছো? আর পাও নাই?
পরিবারের আর কেউ পায় নাই?
ওদের একজন বলল, না। খালি মা পাইছে। একজনের বাসায় কাজ করে। সেইখান থেকে। আব্বা অসুস্থ।
একটু থেমে আবার বলল, পিত্তথলি তে পাথর হইছে তো। ব্যাথা। কাম করতে পারেনা।
বেশি ছোট জন কোন কথা বলে নাই।
কিন্তু, ওদের চোখে কোন অভিযোগ বা কষ্টের ছাপ ওর আম্মু দেখতে পায় নাই।
কিন্তু, এত প্রশ্ন শুনে ওদের হয়তো কোন আশা করেছিলো। একটু পর পর তাকাচ্ছিলো।
ওদের হাতের যৎ সামান্য ছোট একটা নোট দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপে সে বাসায় চলে আসছে।
আসার আগে অবশ্য সাহস করে আরেকবার তাকিয়েছিলো ওদের দিকে। তাদের চোখেমুখে খুশির সেই ঝিলিক…
“আগের বিকেলে মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে একই সড়কের দু’পাশে লাখ টাকার গরুগুলোর বেঁধে রাখার দৃশ্যপট ওলটপালট করে দেখি আর বুক ভেঙে যায়।”
– আজহার লিমন
করুণ এ বর্ণনা শুনি…
আর
কল্পনায় একদিকে অভিযোগহীন ঐ ছোট্ট দুই জোড়া চোখের দৃশ্যপট।
অপরদিকে,
আগের বিকেলে মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে একই সড়কের দু’পাশে লাখ টাকার গরুগুলোর বেঁধে রাখার দৃশ্যপট ওলটপালট করে দেখি আর বুক ভেঙে যায়।
টিভি বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে যায়, আপনার গরুটা ফ্রিজে ধরবে তো!
হায় ইব্রাহিম (আ.), হায় ইসমাইল (আ.), হায় আমাদের কুরবানি!
[আমরা করোনাকালে ঢাকায় আছি, আর আমাদের কুরবানি হয়েছে গ্রামে]
লেখাটি ফেইসবুকে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নবধারা/বিএস