সাকিব হাসান,গলাচিপা (পটুয়াখালী ) প্রতিনিধি
মানুষ ভাবে বয়স বাড়লে মাতৃত্বের সময় শেষ কিন্তু পটুয়াখালীর গলাচিপায় ঘটেছে এক ভিন্ন গল্প। উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর মহিউদ্দিন এলাকায় ৪৬ বছর বয়সী মরজিনা বেগমের কোল জুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক পুত্রসন্তান।
মরজিনা বেগমের বয়স প্রায় ৪৬ বছর, স্বামী রফিক হাওলাদার (৬৫)। তাদের ঘরে ইতিমধ্যে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা এখন বেশ বড় — নাতি-নাতনি মিলিয়ে মোট ছয়জন। এমন সময়ে হঠাৎ করেই পরিবারের সবাই অবাক হয়ে যান নতুন অতিথির আগমনে।
মরজিনা বেগম নিজেই জানতেন না, তিনি গর্ভবতী। তার বড় ছেলের স্ত্রী তানজিলা জানান, “আমার সন্দেহ হয়েছিল শাশুড়ির বাচ্চা হতে পারে, কিন্তু লজ্জায় কিছু বলতে পারিনি।”
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবার তাকে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের বুধবাড়িয়া বাজারের “রাফিয়ান মেডিকেল”-এ নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরত ডিপ্লোমা ডাক্তার ফাতেমা আক্তার রিমা চেকআপ করে দেখেন মরজিনার পেটে পূর্ণ মাসের বাচ্চা।
চেম্বারে ডেলিভারির উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত তাকে চরবিশ্বাস উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম নেয় এক সুস্থ পুত্রসন্তান। মা ও শিশু দুজনই বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ডাঃ ফাতেমা আক্তার রিমা জানান, “মরজিনা বেগমের বয়স বেশি হওয়ায় প্রথমে আমিও অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় সব কিছু স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়।”
উল্লেখ্য, গত এক বছরে ডাঃ ফাতেমা আক্তার রিমা প্রায় ২০০ জন মা’কে নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, তার আন্তরিকতা ও দক্ষতার কারণেই অনেক পরিবার নিরাপদ মাতৃত্বের সেবা পাচ্ছেন গ্রামীণ পর্যায়ে।
ঘটনাটি এখন পুরো চরবিশ্বাস ইউনিয়নে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অনেকেই বলছেন — “এ যেন এক অলৌকিক ঘটনা, বয়স কোনো বাধা নয় যদি নিয়তি লিখে রাখে নতুন জীবনের আগমন।”

