অশোক মুখার্জি কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মৌসুমি কর্মসংস্থানের মধ্যে অন্যতম শুঁটকি তৈরি। উপজেলার বহু মানুষ এ মৌসুমি পেশার সাথে জড়িত। প্রায় সাড়ে চার মাসব্যাপী চলা এ মৌসুমে কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেন এ উপজেলার কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার কুয়াকাটায় শুঁটকি মৌসুমকে সামনে রেখে জোরেশোরে চলছে শুঁটকিপল্লি নির্মাণের কাজ। শীতের বাজার ধরতে এখন দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়লে এ বছর শুঁটকি উৎপাদনে ভালো মৌসুম যাবে এবং শুঁটকির বাজার জমে উঠবে বলে আশা করছেন কুয়াকাটার শুঁটকি ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুঁটকি তৈরির পল্লিগুলোতে চাং, কাঠামো, ঘর ও দোকান নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। শ্রমিকদের বিশ্রাম নেওয়ারও তেমন সুযোগ নেই। পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও কাজ করছেন সমানতালে। মাছ ধরার নৌযানগুলো সমুদ্র থেকে ফিরে এলেই শুরু হবে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের ব্যস্ততা।
দীর্ঘ দুই দশক ধরে শুঁটকি উৎপাদনকারী ইউসুফ মৃধা বলেন, ‘লইট্ট্যা, ফাইস্যা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, পোয়া, রূপচাঁদা, লাক্ষাসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ শুঁটকি করা হয় এবং মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়।’
নারী শ্রমিক সেলিনা বেগম বলেন, ‘একেকটি পল্লি তৈরিতে ১৮-২০ দিন সময় লাগে। আমরা এখানে সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি প্রস্তুত করে থাকি।’
স্থানীয় শ্রমিক হারুন বলেন, ‘নভেম্বরের শুরুতে শুঁটকি মৌসুম শুরু হয়। তাই এখন দিনরাত পল্লি তৈরির কাজ করছি। নৌকা ভেড়ার পরই শুরু হবে আসল কাজ।’
শুঁটকি ব্যবসায়ী সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের এখানে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত ও কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি প্রস্তুত করা হয়। পর্যটকরা সরাসরি দোকান থেকে কেনেন এবং সারা দেশে অনলাইনে ডেলিভারির মাধ্যমে আমরা শুঁটকি সরবরাহ করি। মান বজায় রাখাই আমাদের অঙ্গীকার।’
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসিন সাদীক দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, “যাতে কেউ বিশৃঙ্খলভাবে শুঁটকি শুকাতে না পারে এবং পরিবেশ-স্বাস্থ্য ও গুনগত মান বজায় রাখতে শুঁটকি প্রস্তুতকারীদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় পরিকল্পিত স্থায়ী জায়গা তৈরির কাজ চলছে এবং এ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।”

