প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জঃ
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার কক্ষে ১০ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতক কর্মচারিরা। তাদের চাকুরি স্থায়ী করনের দাবীতে উপাচার্যকে তার কার্যালয়ের অবরুদ্ধ করে রাখে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহাবুব কে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারিদের মাঝে দীর্ঘ আলোচনার পর ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। পরে রাত সাড়ে ৮ টায় তাকে তার কার্যালয় থেকে বের করে ।
১৭ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটির সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুর এবং সদস্য সচিব হলেন ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি তছলিম আহমেদ।
এসময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের কক্ষের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এবং তাদের দাবি স্বপক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাজি রুমা বলেন, আমারা অস্থায়ী ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। আমাদের কোন বেতন ভাতা পাইনা। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করছি। আমরা দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে এখানে চাকুরি নিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময় আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে । কিন্তু বর্তমান উপাচার্য আমাদের কথা রাখেননি। তাই আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আমরা আন্দেলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেই। রাত সাড়ে ৮ টায় কর্তৃপক্ষ ১৭ সদস্যের একটি কমিটি করেছেন । তারা বলেছে ওই কমিটি আমাদের বিষয়ে কাজ করবে তাই আমরা উপাচার্যের কক্ষের তালা খুলে দিয়েছি ।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক আন্দোলনকারী কর্মচারী গোলাম রসুল বলেন, এর আগে আমরা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করি। তখন বিশ্ববিদ্যাল মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসির) একটি প্রতিনিধি দল তদন্ত করে উপাচার্যকে একটা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু উপাচার্য আমাদের বিষয়ে কোন এখনো কোন পদক্ষেপ নেন নি।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত ডিন’স কমিটির এক সভায় দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের বিষয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডে বর্তমান পরিস্থিতি উত্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ও প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান নবধারা কে বলেন, বিম্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করার পর প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি সমাধানের জন্য একটি টিম পাঠিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত দের বোঝানোর চেষ্ট করছে। যাতে তারা অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্তি দেন। এছাড়া বর্তমান উপাচার্য দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারিদের বিষযটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছেন ফলে গত ডিন’স কমিটির সভায় বিষয়টি এজেন্ডা হিসেবে রাখা হয় ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার থেকে তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকতার্দের অনির্দিষ্টকালের জন্য কলম বিরতি কর্মসুচি চলছে ।