কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি দাখিল মাদ্রাসার সুপারের অনিয়ম ও দুর্নীতি আড়াল করতে বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করার অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় কলাপাড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরামে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ শিপাই। এ সময় ভুক্তভোগী নাসিমা বেগম, ইদ্রিস আকন, মো. আজিজ, খোকনসহ এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইউসুফ শিপাই অভিযোগ করেন, বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ.ব.ম ফয়েজ উল্লাহ অভিভাবকদের না জানিয়ে ও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ছাড়াই গোপনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করে বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে আয়া, নৈশপ্রহরী ও পিয়ন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার সকালে অভিভাবক ও এলাকাবাসী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন। ওই মানববন্ধনে তিনি বক্তব্য দেওয়ায় পরদিন শুক্রবার সুপার ফয়েজ উল্লাহ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন, যার কোনো ভিত্তি নেই।
ইউসুফ শিপাই আরও দাবি করেন, সংবাদ সম্মেলনে সুপার ফয়েজ উল্লাহ তার বাবার মাধ্যমে মাদ্রাসায় ০.১৩ শতাংশ জমি দানের কথা উল্লেখ করেন, যা সম্পূর্ণ অসত্য। ওই জমি অন্য একটি মাদ্রাসায় দান করা হলেও ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসায় কোনো জমি দান করা হয়নি।
এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, উত্তর কালামপুর কালিবাড়ি নূরানী দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও আমতলী ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদারকে ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি করা হয়েছে, যিনি নিজেও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে অতীতে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
ইউসুফ শিপাই বলেন, মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। এতে তার সম্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন এবং ওই সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
অন্যদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ.ব.ম ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ইউসুফ শিপাইয়ের বাবা মাদ্রাসার নামে ১৩ শতাংশ জমি রেকর্ড করে দিলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় তিনি তালবাহানা শুরু করেন এবং মানববন্ধন ও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি দাবি করেন, মাদ্রাসার সভাপতি কখনোই ওলামা লীগের সঙ্গে যুক্ত নন এবং টাকা লেনদেনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউসুফ শিপাই নিজেই টাকা নিয়েছেন এবং ফেরত দিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

