উত্তম শর্মা, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আদিবাসিদের ঐতিহ্যবাহী মিলন মেলায় যোগ দিতে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকের সমাগম ঘটে। সকাল থেকেই নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ আসতে শুরু করে মেলায়।
শারদীয় দূর্গা পুজার একদিন পরে উপজেলার গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলন মেলা উৎসবে মেতে উঠে সকল বয়সের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মেলা। মেলায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব মুখর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে এই মিলন মেলা। এটি অনেকের কাছে বাসিয়া হাটি নামে পরিচিত।
শুক্রবার নিজপাড়া, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের আয়োজনে এবং গোলাপগঞ্জ দূর্গাপুজা উদযাপন কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ মনজুরুল ইসলাম।
আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহবায়ক যোশেফ হেমরম এর সভাপতিতে মিলন মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বিশেষ অতিথি ছিলেন মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফসিউর রহমান চৌধুরী নবাব, মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীনুর রহমান চৌধুরী শাহীন, নিজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান আনিস, দিনাজপুর কালিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক রবি মাডি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক মনোজ কুমার রায়,বীরগঞ্জ থানা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত, আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ মুরমু ।
সহ আরো অনেকে।
এই মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে একটি গুজব দেখা যায়। এখানে নাকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোনো পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্ত বাস্তবে এর সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শীতল মার্ডি বলেন, পূর্ব পুরুষেরা এই মেলা শুরু করে। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটি সঠিকভাবে বলা যাবে না। আনুমানিক কয়েক শত বছর পূর্ব থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এটি বাপ-দাদার কাছে শুনেছি। তবে বিয়ের বিষয়টি আমি এই মেলায় হতে দেখিনি।
এই দিনটি ঘিরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সব বয়সী নারী-পুরুষেরা নানা রুপে ভিন্ন ভিন্ন সাজে মেলায় আসেন।