মো.এনামুল হক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। কনকনে ঠান্ডা, হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত দুই দিন ধরে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমজীবী মানুষ।
মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো এলাকা। সকাল হলেও অনেক সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। কোথাও কোথাও পথচারীদের আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। এর আগের দিন সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও তেমন কোনো উত্তাপ অনুভূত হয়নি। বিকেল গড়াতেই শুরু হয় ঠান্ডা বাতাসের প্রবাহ, যা রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। শীত নিবারণের জন্য সাধারণ মানুষ সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, পঞ্চগড় হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে নিয়মিত হিমশীতল বাতাস প্রবাহিত হয়। এর ফলে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হয়। তিনি আরও বলেন, টানা প্রায় দশ দিন মৃদু শৈত্য প্রবাহের পর গত দুই দিন ধরে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করছে।
আকাশে হালকা মেঘ ও দীর্ঘ সময় কুয়াশা থাকায় দিনের বেলা সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারছে না। ফলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত না হওয়ায় সারাদিনই ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার।
আবহাওয়া কর্মকর্তা জানান, চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ এবং জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মৃদু শৈত্য প্রবাহ মাঝারি শৈত্য প্রবাহে রূপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

