মোঃ জিহাদুল ইসলাম, নড়াইল
কৃষকদের মাঝে ধান কাটার ধুম পড়বে, নতুন ধানের গন্ধে ভরে উঠবে উঠান। এমন আশায় কৃষকরা যখন সোনালি স্বপ্নের দিন গুনছে, ঠিক তখনই সব কিছু তছনছ করে দিল ঝড়ের ছোবল।
নড়াইলের কালিয়ায় আকষ্মিক ঝড় ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দূর থেকে ধান গাছগুলোকে স্বাভাবিক মনে হলেও ছড়ায় থাকা ধানগুলো চিটে হয়ে গেছে। বাতাসের তোড়ে অধিকাংশ ক্ষেতের ধান মাটিতে মিশে গেছে।
গত রোববার (৪ এপ্রিল) রাতে হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে কৃষকদের ধান ক্ষেতের এই ক্ষতি হয়। ফলন্ত ধানের এমন তিতে চাষীদের সোনালী স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। করোনা পরিস্থিতিতে ধার দেনা করা টাকায় উৎপাদিত ফসলের এমন ক্ষতিতে বাকরুদ্ধ কৃষকেরা! তাদের দাবী এ অপুরণীয় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার যেন তাদের সহযোগিতা করেন।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি বিলে গেলে চাষীরা বলেন, কয়েকদিন আগেও মাঠে যে ধান দোল খাচ্ছিল সেগুলো আজ পুড়ে ঝলসে গেছে!
কৃষক সাইফুল মন্ডল, সাহান চৌধুরী, আরকান চৌধুরী, খোকন শরীফ, মুকুল চৌধুরী, আবু সাঈদ, টুটুল লস্কর বলেন, আমরা খুব আশা করে ধান রোপণ করেছিলাম। এক মাসের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারতাম, কিন্তু প্রাকৃতিকদুর্যোগে ধানের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।
অপর চাষী মোঃ ইয়ার আলী বলেন, অনেক আশা করে ধান লাগিয়ে ছিলাম, ধান কাটবো, বাড়িতে নিবো, পরিবার পরিজন নিয়ে বছর ভরে খাবো ও বিক্রি করে পরিবারের ভরণ পোষণ হবে। কিন্তু এই ঝড়ের তান্ডবে সব আশা শেষ হয়ে গেল। এখন কিভাবে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাঁচবো, কিভাবে চলবো এই বলে আপে প্রকাশ করেন তিনি।
ফেরদৌস মন্ডল, বায়েজিদ মন্ডল ও রিয়াজ চৌধুরী বলেন, হঠাৎ ঝড় আমাদের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। করোনায় কাজ বন্ধ, আয় রোজগারও বন্ধ । ভরসা ছিল ধানের ওপর, তাও শেষ হলো আকষ্মিক ঝড়ে।
কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুবির কুমার বিশ্বাস বলেন, এ বছর উপজেলায় মোট ১৬৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে কিছু ধান তে হিটশক জনিত কারণে ধানের ফুলস্তরের শীষ সাদা হয়ে গেছে এবং আকস্মিক ঝড়ে ১২০০ বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবার ফলনও কম হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ক্ষতিপূরনের আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা পাঠাবো।
নবধারা/বিএস