বড়দিন
স্বপ্ন শাহিন খান
এমন মানুষও আছে, যে তার বসানো ছোট চারা গাছটায় দিনের পর দিন জল ঢেলে যায়—
কোনও একদিন গাছটা ফল দেবে বলে। গাছটা বড় হয়, সবুজ পাতায় ছেয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ্যা গাছে ফুল ফল কখনও হয় না। মানুষটি তখনও নিয়ম করে গাছে জল দেয়। হঠাৎ দীর্ঘ বছর পরে, গাছটির বৃদ্ধ বয়সে তার কোল জুড়ে ফুটে ওঠে হলদে ফুল।
মানুষটি আনন্দে বলে ওঠে, স্যান্টা কথা রেখেছে,
এই শীতেই গাছে ফুল ধরেছে!
এমন মানুষও আছে, অনবরত হেরে যাওয়া দলের পতাকা নিয়ে গ্যালারিতে বসে চিৎকার করে বলছে— স্যান্টা প্লিজ এবারে জিতিয়ে দাও।
প্রতিবারই বলে, বহুদিন ধরে বলে। তবুও সেবারে হঠাৎ করেই কোনও এক অলৌকিক ঘটনায় ওই হেরে যাওয়া দলের মাথায় উঠেছে জয়ের মুকুট। আর মানুষটির মনে লালটুপির প্রতি তীব্র বিশ্বাস। ভাগ্যিস স্যান্টা ছিল।
দু’জনের মনেই ভরসা ছিল।
দু’জনের মনেই অনুভূতিগুলো ছিল সুপ্ত। তবুও বিশ্বাস ছিল, হয়তো অনেক বছর পরে আবার দেখা হবে জীবনের কোন একটা মোড়ে। কত কত কৃষ্ণচূড়ারা আবির রঙা হয়েছে। অবুঝ মন স্বপ্ন দেখছে, আফসোস করেছে আরেকটা বসন্ত পেরিয়ে যাবার।
হঠাৎ পাতা ঝরার দিনে আবার দু’জনের দেখা। অনুভূতিগুলো জাগ্রত হয়ে উঠেছে আচমকা!
এটা নিশ্চই স্যান্টা উপহার। নাহলে রঙিন দিন অতিবাহিত করে এমন ধূসরে ফিরে পাওয়া কেন।
প্রেমিক-প্রেমিকার মান-অভিমানের স্ট্রবেরী না চকলেটের ঝগড়ায় ক্যাথলিনের কেক রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে। কাগজ কুড়ানো মেয়েটি কেকের প্যাকেট হাতে ঝুপড়ির দিকে ছুটছে…
স্যান্টা বুড়ো বড্ড ভালো। নিশ্চয় জানতো ও আজ কাগজ কুড়াতে বেরোবে, তাইতো কেকটা ফেলে রেখেছিল ওখানে। অটুট বিশ্বাস বুড়ো স্যান্টাকে।
এমন আরও অনেক… অনেক আছে। আমাদের বিশ্বাসে বেঁচে থাকুক স্যান্টা বুড়োর মিথ। লাল সাদা জোব্বা, ঝোলা টুপি… স্লেজ গাড়ি… অনেকটা বিশ্বাস। মোজা আর টুপিতে নাইবা হ’লো—
মনে থাকুক অনেকটা আশা।
স্যান্টা আছেই। হঠাৎ কখন এসে পড়বে একরাশ না পাওয়ার ভিড়ে ছোট একটা পাওয়া হয়ে।’
‘জিঙ্গলবেল জিঙ্গল বেল, জিঙ্গল অল দ্যা ওয়ে…’
শুভ বড়দিন!