মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে পুলিশ পুত্রের সামনেই পুত্রবধূর নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছেন দিপালী রানী সরকার (৬৫) নামে এক মা। উপজেলার গাংনী সরকার পাড়া এলাকায় মায়ের কষ্টার্জিত টাকায় করা বাড়িতেই গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। ন্যাক্কার জনক বর্বরোচিত এ ঘটনায় আহত ওই মা মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি গাংনী সরকার পাড়া এলাকার মৃত মন্টু কুমার সরকারের স্ত্রী।
চিকিৎসাধীন ওই নারী জানায়, তার স্বামীর এক টুকরো বাড়ির জমি ছাড়া আর কিছুই নাই। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করেছেন। ফেরী করে চুড়ি-ফিতাসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে পড়া লেখা শিখিয়ে এসপির পায়ে ধরে পুলিশে চাকুরী দিয়েছেন ছেলে রিপন কুমার সরকারকে। রিপন কুমার সরকার বর্তমানে কর্মরত কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার কোন এক ফাড়িতে। তার ভাস্যমতে রিপন প্রেম করে বিয়ে করেছে মুসলমান পরিবারের এক মেয়েকে। অবশ্য তার বাড়িতে এসে শাখা সিদুর পরছে। ওই বধূ তাকে প্রায়ই শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করে।
ঘটনার দিন তাঁর ছেলে পুলিশ সদস্য রিপন কুমার সরকার বাড়িতে আসলেও মার সাথে কথা বলে নাই। এরপর বিকালের দিকে রিপনের সামনেই তাঁর স্ত্রী বিথী (২১) বর্বরোচিত নির্যাতন শুরু করে। প্রথমে শলা দিয়ে পেটায় মাকে, এরপর চুলের মুঠি ধরে ঘরের দেয়ালে মাথায় আঘাত করে বারংবার এবং সবশেষে হত্যার উদ্দেশ্যে বটি দিয়ে কুপিয়ে যখম করে। এসময় ছেলে রিপন কুমার সরকার দাড়িয়ে কেবল দেখে। একপর্যায়ে নিজে উদ্ধার না করে পাশের এক চাচীকে ডাকে এবং তার মাকে হাসপাতালে যেতে নিষেধ করে। গুরুতর যখমী মা ওই ছেলের বাধা উপেক্ষা করে অন্যের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন।
পুলিশ সদস্য রিপন কুমার সরকার বলেন, তার মা প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়েছে পরে তাঁর স্ত্রীও মারছে। একপর্যায়ে সে ঠেকিয়েছে বলেও জানায়।
রিপন কুমার সরকারের স্ত্রী বিথী বলেন, প্রথমে আমাকে মারছে পরে আমি মারছি। এছাড়া তার শাশুড়ী তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগে খাবার পানিতে বিষ মিশিয়ে রেখেছিলো, সে বুঝতে পেরে ওই পানি খায় নাই। এছাড়া তাঁর শাশুড়ি তাদের একটি মোবাইল চুরি করছিলো, সকল অশান্তি তাঁর শাশুড়ির জন্য হয়।
এবিষয়ে মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মাফ্ফারা তাসনীন নবধারা কে বলেন, ওই মা লিখিত অভিযোগ করলে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।