বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
সরকারি চাকরি কেবল দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র নয়, বরং মানবিকতার এক উজ্জ্বল মঞ্চ—এই সত্য আবারও প্রমাণ করলেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবর্তী।
সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিট। সরকারি অফিস সময় পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু ওই সময়েই পৌর শহরের বনখঞ্জা, ভাল্লুকমাড়ি ও দেবীপুর এলাকা থেকে কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি এসে আশ্রয় নেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে। তারা জানান, কুকুরের একটি দল হঠাৎ করে তাদের পালিত পাঁচটি ছাগলের ওপর আক্রমণ চালায়। এর মধ্যে একটি ছাগল ঘটনাস্থলেই মারা যায়, আর বাকি চারটি মারাত্মক আহত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও দায়িত্ববোধ থেকে একচুলও সরে আসেননি বিপুল কুমার চক্রবর্তী। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ছাগলগুলোর চিকিৎসায় হাত লাগান। ইনজেকশন ও স্যালাইন প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সেবা দেন স্ব-উদ্যোগে ও সম্পূর্ণ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম অফিস তো শেষ, ডাক্তার আর পাব না। কিন্তু বিপুল স্যার ছিলেন। তিনি নিজ হাতে চিকিৎসা দিয়েছেন। উনি না থাকলে আমাদের বাকি ছাগলগুলোও মরে যেত।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, সরকারি অফিসগুলোতে এ ধরনের মনোভাব ও সেবামূলক আচরণ আজকের সমাজে সত্যিই অনুকরণীয়। বনখঞ্জা এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “উনার মতো যদি প্রত্যেক উপজেলায় একজন করে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা থাকতেন, তাহলে গরু-ছাগলের রোগ নিয়ে গ্রামে আর আতঙ্ক থাকত না।”
প্রাণিসেবাপ্রার্থী ও গ্রামবাসীদের মতে, বিপুল কুমার চক্রবর্তীর এই দায়িত্বশীলতা শুধু চিকিৎসা সেবা নয়, বরং মানসিক প্রশান্তি ও আস্থার উৎস হয়ে উঠেছে তাঁদের জন্য।
ভুক্তভোগীদের প্রত্যাশা—বিপুল কুমার চক্রবর্তীর মতো মানবিক সরকারি কর্মকর্তারাই বদলে দিতে পারেন সেবাপ্রদান ব্যবস্থার চিত্র। তাঁর এই দৃষ্টান্ত দেশের অন্যান্য উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের জন্য একটি প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।